বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগকারী হিসেবে অভিবাসন গ্রহণ করেছে অনেক বাংলাদেশী। বিনিয়োগ কোটার আওতায় দেশগুলোয় দীর্ঘমেয়াদে বসবাসের অনুমোদন নিচ্ছে তারা। নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর আবেদন করছেন নাগরিকত্ব বা স্থায়ীভাবে বসবাসের (পিআর) সুযোগের জন্য।
বিনিয়োগ অভিবাসন-সংক্রান্ত ডাটাবেজ আইএমআই ডাটা সেন্টার নিয়মিতভাবেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ কোটায় আবেদনকারীদের তথ্য সংগ্রহ ও তা প্রকাশ করছে। সেখানে বাংলাদেশীদের সম্পর্কে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, কভিড মহামারীর প্রাদুর্ভাবের আগ পর্যন্ত পাঁচ বছরে (২০১৫ থেকে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ) এখান থেকে অনেকেই মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোয় বিনিয়োগকারী হিসেবে ভিসার আবেদন করেছে। আবার অ্যান্টিগা ও বারবুডা, সেইন্ট লুসিয়া এবং ভানুয়াতুর মতো ক্ষুদ্র অর্থনীতির দেশেও আবেদন হয়েছে বেশ কিছু। এমনকি অর্থনৈতিক দুর্বিপাকের মধ্যে থাকা ইউরোপীয় দেশ গ্রিসেও গোল্ডেন ভিসা ক্যাটাগরিতে আবেদনের তথ্য রয়েছে। ২০১৫ থেকে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে এ আট দেশে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারিত প্রোগ্রামের আওতায় ভিসার আবেদন করেছে দেড় হাজারের বেশি বাংলাদেশী।
তবে আইএমআইয়ের তালিকাটি সম্পর্কে অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ পরিসংখ্যানটি অনেকটা রক্ষণশীল ও সীমিত পরিসরে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি। দেশগুলোয় প্রকাশিত তথ্যের চেয়েও অনেক বেশি সংখ্যক বাংলাদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য চালুকৃত গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করেছে। আবার তালিকায় উল্লিখিত আট দেশের বাইরেও পর্তুগাল, কানাডা ও সাইপ্রাসের মতো বেশ কয়েকটি দেশে গোল্ডেন এবং বিনিয়োগ ভিসার জন্য আবেদন করেছে অনেকে। সব মিলিয়ে শুধু কভিডের আগের পাঁচ বছরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদনকারী বাংলাদেশীর সংখ্যা অন্তত দুই সহস্রাধিক।
আইএমআইয়ের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে বিনিয়োগ কোটায় সবচেয়ে বেশি আবেদন হয়েছে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে। ওই সময়ে এ আট দেশে বাংলাদেশীদের বিনিয়োগ ভিসার আবেদন জমা হয়েছে ৫৭৬টি। ২০১৫ থেকে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা হয়েছে মালয়েশিয়ার এম২এইচ প্রোগ্রামের আওতায়। উল্লিখিত পাঁচ বছরে প্রোগ্রামটির আওতায় ভিসার আবেদন করেছে ১ হাজার ১৩০ বাংলাদেশী।
মালয়েশিয়ায় বিনিয়োগকারী হিসেবে অভিবাসনের জন্য সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় প্রোগ্রাম হলো ‘মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ড হোম’ বা এমএম২এইচ। এ প্রোগ্রামের আওতায় আবেদন করতে হলে আবেদনকারীকে লিকুইড অ্যাসেট বা তরল সম্পদ (নগদ অর্থ, ব্যাংকে জমা বা সহজে নগদায়নযোগ্য বিনিয়োগ) দেখাতে হয় কমপক্ষে ১৫ লাখ রিঙ্গিতের সমপরিমাণ। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী তা ৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকার সমপরিমাণ (১ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত = ২৪ টাকা ৩৮ পয়সা)। এছাড়া মাসিক আয় দেখাতে হয় অন্তত ৪০ হাজার রিঙ্গিতের সমপরিমাণ (৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকার কিছু বেশি)। মূলত ধনাঢ্য বিদেশীদের মালয়েশিয়ায় অবস্থানের সুযোগ করে দিতে প্রোগ্রামটি চালু করা হয়েছে বলে দেশটির সরকারি ওয়েবসাইটের তথ্যে উঠে এসেছে।
মালয়েশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে এমএম২এইচ প্রোগ্রামের আওতায় ভিসা আবেদন সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে দেশটিতে এ প্রোগ্রামের আওতায় অসংখ্য আবেদনকারী প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এ সম্পর্কে কোনো তথ্য বা কারণ এখন পর্যন্ত দেশটি প্রকাশ করেনি। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে প্রোগ্রামটি স্থগিত করা হয়, যা ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে আবার চালু করা হয়েছে।
দেশটির সরকার জানিয়েছে, এমএম২এইচ ভিসার আওতায় আবেদনকারীদের উৎস দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন তৃতীয়। ২০০২ থেকে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ১৭ বছরে এ প্রোগ্রামের আওতায় ভিসার জন্য পাওয়া আবেদনের প্রায় ১০ শতাংশই এসেছিল বাংলাদেশীদের কাছ থেকে।
নিয়ম অনুযায়ী এমএম২এইচ ভিসা হাতে পাওয়ার পর মালয়েশিয়ার কোনো ব্যাংকে আবেদনকারীকে অন্তত ১০ লাখ রিঙ্গিত (প্রায় ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা) স্থায়ী আমানত হিসেবে জমা রাখতে হয়। এছাড়া আবেদনকারীর প্রত্যেক পোষ্যের জন্য জমা রাখতে হয় অতিরিক্ত আরো ৫০ হাজার রিঙ্গিত (১২ লাখ টাকার কিছু বেশি)। মালয়েশিয়া সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন পাওয়ার আগ পর্যন্ত এ অর্থ উত্তোলন করা যায় না।
এমএম২এইচ ভিসায় মালয়েশিয়ায় অভিবাসন গ্রহণে সহায়তাকারী এজেন্সিগুলো জানিয়েছে, অভিবাসন গ্রহণ নয়, শুধু প্রপার্টি ক্রয়ের উদ্দেশ্য থেকেও চীনের মতো কোনো কোনো দেশ থেকে এ ভিসায় আবেদন করার নজির রয়েছে।
২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাংলাদেশীদের কাছে বিনিয়োগ কোটায় অভিবাসন গন্তব্য হিসেবে দ্বিতীয় স্থানে ছিল অস্ট্রেলিয়া। এ সময় সেখানে বিনিয়োগকারী হিসেবে ভিসার আবেদন করেছে ৩১৭ বাংলাদেশী। দেশটিতে বিনিয়োগকারী হিসেবে ভিসার জন্য আবেদন করতে হয় বিজনেস ইনোভেশন অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট (প্রভিশনাল) বা বিআইআইপি প্রোগ্রামের আওতায়। এ প্রোগ্রামের আওতায় আবার বিজনেস ইনোভেশন স্ট্রিম, ইনভেস্টর স্ট্রিম, সিগনিফিকেন্ট ইনভেস্টর স্ট্রিম, বিজনেস ইনোভেশন এক্সটেনশন স্ট্রিম, সিগনিফিকেন্ট ইনভেস্টর এক্সটেনশন স্ট্রিম, প্রিমিয়াম ইনভেস্টর স্ট্রিম ও অন্ট্রাপ্রেনিউর স্ট্রিম ইত্যাদি সাবক্যাটাগরি রয়েছে। এসব সাবক্যাটাগরির মধ্যে ইনভেস্টর বা বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারিত স্ট্রিমগুলোয় অস্ট্রেলিয়ার ভিসা পেতে বিনিয়োগ করতে হয় ২৫ লাখ থেকে দেড় কোটি অস্ট্রেলীয় ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৮ কোটি ৩৬ লাখ থেকে প্রায় ১১০ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ থেকে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে বৈধভাবে বিনিয়োগের সুযোগ তেমন একটা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুবীর নন্দী দাস বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো কোম্পানি বা নাগরিক অন্য দেশে নির্দিষ্ট অংকের বেশি বিনিয়োগ করতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিতে হবে। এছাড়া তা করা যাবে না। আমরা যেটি দেখছি; যারা যাচ্ছে তারা কেউ অফিশিয়াল চ্যানেলে নিতে পারছে না। অফিশিয়ালি বাংলাদেশ থেকে এত টাকা নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক এ অনুমতিটা দেবে না। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের আইন তাকে এত বেশি টাকা দেশের বাইরে নিতে দেয়ার অনুমতি দেয় না। সুতরাং যারা এভাবে ভিসার অধিকারী হচ্ছে, তাদের অধিকাংশই অবৈধ। তবে কেউ যদি বিদেশে উপার্জন করে বা তাদের পরিবারের কোনো সদস্য বিদেশ থেকে আয় করে টাকা দেয়; এমন দু-একটি ব্যতিক্রম বাদ দিয়ে গড়ে এগুলো কালো টাকা। এ টাকাটা মূলত দুর্নীতির টাকা।’
যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগকারী হিসেবে ইবি-৫ ভিসা পাওয়ার অর্থ হলো দেশটিতে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি বা গ্রিন কার্ড পেয়ে যাওয়া। এজন্য দেশটির বেকারত্ব বেশি এমন কোনো এলাকায় ৮ লাখ ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা) বিনিয়োগ করতে হয়। অথবা কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে এমন এলাকায় সাড়ে ১০ লাখ ডলার (প্রায় ১১ কোটি টাকা) বিনিয়োগ অথবা অন্তত ১০ জন মার্কিন নাগরিকের সার্বক্ষণিক চাকরির ব্যবস্থা করতে পারলে এ ভিসা পাওয়া যায়। আলোচিত পাঁচ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ইবি-৫ ভিসার জন্য আবেদন করেছে ৩৩ বাংলাদেশী।
বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারিত যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি ক্যাটাগরি হলো ই২। এ ভিসা পেতে হলে ন্যূনতম দেড় লাখ ডলার (১ কোটি ২৯ লাখ টাকা) বিনিয়োগ করতে হয়। এ বিনিয়োগের অর্থ কখনোই তুলে নিতে পারবেন না বিনিয়োগকারীরা। পাঁচ বছরে এ প্রোগ্রামের আওতায় আবেদন করেছেন ১৬ বাংলাদেশী।
যুক্তরাজ্যে বিনিয়োগকারীদের জন্য ভিসা রয়েছে দুই ধরনের। এগুলো হলো টিয়ার ১ ইনভেস্টর ভিসা ও টিয়ার ১ অন্ট্রাপ্রেনিউর ভিসা। ব্রিটিশ অভিবাসন এজেন্সিগুলোর তথ্য অনুযায়ী, টিয়ার ১ ইনভেস্টর ভিসা হলো যুক্তরাজ্যে সক্রিয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করতে আগ্রহী অতিধনী ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারিত ভিসা প্রোগ্রাম। এ ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে অভিবাসনপ্রত্যাশীকে অন্তত ২০ লাখ পাউন্ড (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী ২৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকার বেশি) যেকোনো মুহূর্তে বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত হিসেবে দেখাতে হয়। এ ভিসা গ্রহণকারীদের নিজ নিজ পোষ্যদের সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাজ্যে অভিবাসনের সুযোগ রয়েছে। টিয়ার ১ অন্ট্রাপ্রেনিউর ভিসার আওতায় যুক্তরাজ্যে নতুন ব্যবসা শুরুর জন্য উদ্যোক্তা হিসেবে বিনিয়োগ করতে হয় ২ লাখ পাউন্ড (আড়াই কোটি টাকার বেশি)। পাঁচ বছরে যুক্তরাজ্যে টিয়ার ১ ইনভেস্টর ভিসায় আবেদনকারী বাংলাদেশীর সংখ্যা তিন। টিয়ার ১ অন্ট্রাপ্রেনিউর ভিসায় আবেদন করেছেন তিন বাংলাদেশী।
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের অ্যান্টিগা ও বারবুডায় বিনিয়োগের মাধ্যমে ভিসা পাওয়ার জন্য সিআইপি ভিসা (সিটিজেনশিপ বাই ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম) চালু হয় ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে। এজন্য বিদেশী বিনিয়োগকারীদের তিনটি শর্তের যেকোনো একটি পূরণ করতে হয়। এর একটি হলো দেশটির জাতীয় উন্নয়ন তহবিলে বিনিয়োগ। এজন্য অফেরতযোগ্য বিনিয়োগ বা অনুদান হিসেবে এ তহবিলে ২ লাখ ডলার (প্রায় ২ কোটি ৮ লাখ টাকা) জমা দিতে হয়। এছাড়া রিয়েল এস্টেট খাতে ৪ লাখ ডলার (৪ কোটি ১৫ লাখ টাকার বেশি) মূল্যের প্রপার্টি ক্রয় অথবা যেকোনো ব্যবসায় ১৫ লাখ ডলার (প্রায় ১৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা) বিনিয়োগ করতে হয়। কভিডের আগের পাঁচ বছরে দেশটিতে এ কোটায় ভিসার জন্য আবেদন করেছেন ১১৮ বাংলাদেশী।
অনেকটা কাছাকাছি শর্তে ভিসা পাওয়া যায় ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের আরেক দেশ সেন্ট লুসিয়ায়। এক্ষেত্রে দেশটির জাতীয় উন্নয়ন তহবিলে প্রদেয় অনুদানের পরিমাণ ১ লাখ ডলার (প্রায় ১ কোটি ৪ লাখ টাকা)। রিয়েল এস্টেট খাতে প্রপার্টি ক্রয়ের মাধ্যমে ভিসা পেতে দিতে হবে ২ লাখ ডলার (২ কোটি টাকার বেশি)। এছাড়া দেশটির দীর্ঘমেয়াদি সরকারি বন্ডে বড় অংকের বিনিয়োগের মাধ্যমেও এ কোটায় ভিসা পাওয়া যায়। আলোচিত সময়ে এখানে ভিসার জন্য আবেদন করেছেন আট বাংলাদেশী বিনিয়োগকারী।
ভানুয়াতুতে বিনিয়োগকারীদের ডিএসপি প্রোগ্রামের আওতায় পাঁচ বছরে ভিসার জন্য আবেদন করেছেন ১১ জন। একই সময়ের মধ্যে গ্রিসে গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করেছেন এক বাংলাদেশী।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বৈধ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ থেকে বছরে ১২ হাজার ডলার দেশের বাইরে নেয়া যায়। সরকার সম্প্রতি একটি বিশেষ সুবিধা দিয়েছে, সেটি হলো ব্যক্তি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো কতগুলো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারবে। তবে সে সুবিধাও এর সঙ্গে যাচ্ছে না। কাজেই আমরা মনে করি বিনিয়োগকারী কোটায় ভিসা পেতে যারা দেশের বাইরে টাকা নিচ্ছে, তারা অবৈধভাবেই নিচ্ছে। তবে যে তথ্য সামনে আসছে, তা পাচারের প্রকৃত ব্যাপ্তির একটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশ মাত্র। কারণ এ ধরনের ব্যক্তিরা ভিসা পাওয়ার জন্য যে অর্থ নিচ্ছে, তার আগেই আরো অনেক টাকা তারা দেশের বাইরে নিয়ে গেছে বাড়ি কেনার জন্য। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা নেয়ার জন্য যে ভিসা তারা পায়, এর বাইরেও আরো অর্থ পরে তাদের নিতে হয় সেখানে থাকা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য। সেটিও কিন্তু অবৈধ প্রক্রিয়ায়। পাচারকৃত অর্থ যদি দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বিনিয়োগ করা হতো, তাহলে অর্থনীতির গতিশীলতা বাড়ত। আয় বৈষম্য কমানো যেত। সরকার এখন আইএমএফের কাছ থেকে যে পরিমাণ ঋণ নিচ্ছে, তার কয়েকগুণ সঞ্চয় করা যেত।’