মূল হোস্টেলের দ্বিতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রের নাম স্বপ্নদীপ কুন্ডু। ১৮ বছরের কুন্ডুর বাড়ি নদীয়া জেলার বগুলায়। বাংলা বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি।
পুলিশ জানায়, তিনি একাধিক আঘাত পেয়েছিলেন। কেপিসি মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা চলাকালীন ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মারা যান।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ছাত্রটিকে হোস্টেলের কয়েকজন সিনিয়র বোর্ডার উত্যক্ত করেছিল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের আরেক ছাত্র এক ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেছেন, তার বন্ধু কুন্ডুর মৃত্যুর জন্য ‘কয়েকজন সিনিয়রের’ র্যাগিং দায়ী।
সেই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমার নাম অর্পণ মাঝি। আমি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমার পরিবার অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল এবং আমি আসানসোলে বড় হয়েছি। স্বাভাবিকভাবেই ভর্তির সময় আমি একটি হোস্টেলের জন্য আবেদন করেছিলাম। হোস্টেলে দুই থেকে তিন রাত কাটানো বেশ কঠিন ছিল। সে কারণে আমি অসুবিধা সত্ত্বেও একটি মেস খুঁজতে শুরু করি।’
হোস্টেলে সিনিয়র বোর্ডারদের একটি অংশের র্যাগিংয়ের কথা উল্লেখ করে মাঝি লেখেন, ‘আমি মূল হোস্টেল সম্পর্কে অনেক গল্প শুনেছি। বন্যা দুর্গতদের সাহায্য করার, কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তারা। আমি বিশ্বাস করি প্রধান হোস্টেলের বেশিরভাগ সিনিয়ররা এই ঐতিহ্য বহন করে। কিন্তু তাদের কয়েকজনের জন্য আমি আমার সহপাঠীকে হারিয়েছি।’
পুলিশ বলছে, বুধবার রাত ৯টার দিকে কুন্ডু তার মাকে ফোন করেছিলেন। তিনি ‘কিছু নিয়ে’ ভয় পাচ্ছিলেন বলে মাকে জানিয়েছিলেন।
পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তার ফোন পরে বন্ধ হয়ে যায়। আমরা তার কল লিস্টে খোঁজ নিচ্ছি। আমরা তার রুমমেটদের মোবাইল ফোন যাচাই করছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছি।
তিনি বলেন, ‘সিনিয়ররা তাকে সমকামী বলা শুরু করার পর থেকে ছেলেটি মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিল বলে মনে হচ্ছে। বুধবার অন্তত চারবার তিনি তার মাকে ফোন করেন। সন্ধ্যায় তিনি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি নিষ্ক্রিয় করে দেয়।’
গভর্নর সিভি আনন্দ বোস এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরও। তিনি হোস্টেল পরিদর্শন করে কুন্ডুর বাবাকে তার ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।