বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯ শতাংশ শিক্ষক পিএইচডিধারী - দৈনিকশিক্ষা

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯ শতাংশ শিক্ষক পিএইচডিধারী

এনামুল হক প্রিন্স, দৈনিক শিক্ষাডটকম |

এনামুল হক প্রিন্স, দৈনিক শিক্ষাডটকম:  শিক্ষাদান আন্তর্জাতিক বা মহাদেশীয় মানের না হলেও প্রতিবছর দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পিএইচডিধারী শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকের ২৯ শতাংশই পিএইচডিধারী।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে তথ্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ৪৯তম বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ইউজিসি ওই বছর শিক্ষা কার্যক্রম চালু থাকা ৫৩টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ১০৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তথ্য নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

দৈনিক শিক্ষাডটকম-এর হাতে থাকা ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে পিএইচডিধারী শিক্ষক ছিলেন ৫ হাজার ১৫, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে ৫ হাজার ৩৪৭, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে ৫ হাজার ৬৫১, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ৫ হাজার ৬০৬ এবং ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে ৬ হাজার ২৩৮ জন (৩৮ শতাংশ)। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল বা সমমান শিক্ষকদের সংখ্যাও ১ হাজার ২১৬ জন।

পিএইচডিধারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ১৩২ জন, তাদের মোট শিক্ষক ২ হাজার ২৯৯ জন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৮১ জন শিক্ষকের মধ্যে ৮৯৬ জনই পিএইচডিধারী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৬৫ জনের মধ্যে ৪৩৪, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৩৩ জনের মধ্যে ৩৭৭, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৫১০ জনের মধ্যে ৩৬১ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৬৪ জনের মধ্যে ৩২৭ জন শিক্ষক পিএইচডিধারী।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রতিবছর পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে ছিল ৩ হাজার ১২০, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে ৩ হাজার ২০৯, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে ২ হাজার ৯৫০, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ২ হাজার ৯৪৪ এবং ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে পিএইচডিধারী শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৫১০ জন (২১ শতাংশ)। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডিধারী শিক্ষকের সংখ্যা ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের তুলনায় ৫৬৬ জন বেশি। এর মধ্যে পূর্ণকালীন ১ হাজার ৯০৪ জন এবং খ-কালীন ১ হাজার ৬০৬ জন। সবচেয়ে বেশিসংখ্যক পিএইচডিধারী শিক্ষক নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ২৬০, দ্বিতীয় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে ২৪৮, তৃতীয় ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে ২০৬, চতুর্থ ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে ১৮৪ এবং পঞ্চম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে ১৪০ জন।

তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলা পিএইচডিধারী শিক্ষকের সংখ্যা খুবই কম মাত্র ৪৮১ জন। এর মধ্যে পূর্ণকালীন ৩৭৬ ও খ-কালীন ১০৫ জন। যাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে ৬১ এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নর্থ সাউথে ৫০ জন।

২০২২ খ্রিষ্টাব্দে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৩৯৯ জন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২২৭ জন অর্থাৎ ৩২ শতাংশ অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ৩ হাজার ৯৮ জন (১৯ শতাংশ), সহকারী অধ্যাপক ৫ হাজার ৫৩৮ জন (৩৪ শতাংশ), প্রভাষক ২ হাজার ১৫৫ জন (১৩ শতাংশ) ও অন্যান্য ৩৮১ জন (২ শতাংশ)। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ১:১৮ জন।

অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৫০৮ জন। এর মধ্যে ১ হাজার ৮৫৮ জন অর্থাৎ ১১ শতাংশ অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ১ হাজার ৫৩১ জন (১০ শতাংশ), সহকারী অধ্যাপক ৩ হাজার ৯৮৮ জন (২৪ শতাংশ), প্রভাষক ৮ হাজার ৪২২ জন (৫১ শতাংশ) এবং অন্যান্য ৭০৯ জন (৪ শতাংশ)। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ১:২১ জন।

বার্ষিক প্রতিবেদনের মন্তব্যে বলা হয়েছে, প্রতিবছর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লেও শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ছে না। আবার পিএইচডি ডিগ্রিধারী নারী শিক্ষকের সংখ্যা কম।

ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘উচ্চশিক্ষার মান বাড়ানোর জন্য শিক্ষার পরিবেশ, স্টুডেন্টদের সার্ভিস, একাডেমি-ইন্ডাস্ট্রি লিংকেজ, গবেষণাসহ নানা বিষয় জড়িত। এখন একজন শিক্ষক পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করলে তার নিজের উন্নয়ন হলো। কিন্তু তার সেই অর্জন শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে না পারলে তা কাজে লাগবে না। আমাদের টিচিং-লার্নিং, অ্যাসেসমেন্ট ক্রাইটেরিয়াসহ নানা জায়গায় পরিবর্তন আনতে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য ইউনিভার্সিটি টিচার্স ট্রেনিং একাডেমি করা খুবই প্রয়োজন। কারণ টিচিং টেকনিক, লার্নিংয়ে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন আসছে। তা শিক্ষকদেরও যথাসময়ে জানাতে হবে, যোগ করেন তিনি। 

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035350322723389