বিয়ের আসর থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও এক ছাত্রীর মুক্তির দাবি করে দেশব্যাপী তুমুল আলোচনায় উঠে এসেছেন ঝিনাইদহের শিক্ষার্থী নবদম্পতি মাহমুদুল ও সুমাইয়া। তাদের এই অভিনব প্রতিবাদের ভাষা এখন ‘টক অব দি’ কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। নেটিজেন ও ভুক্তভোগীরা বিয়ের আসরে তাদের এই ব্যতিক্রম প্রতিবাদকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। এ নিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে আলোচনা।
জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে মাহমুদুল ইসলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক। সুমাইয়া আফরিন একই উপজেলার গান্না ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের মেয়ে। তিনি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। গত মঙ্গলবার ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানাই এলাকার প্রফেসর কমিউনিটি সেন্টারে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের আসরেই নবদম্পতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে হৈ চৈ ফেলে দেন।
মাহমুদুলের হাতে ‘ফ্রি খাদিজা’ ও সুমাইয়ার হাতে ‘এ্যবলিশ ডিএসএ’ লেখা প্ল্যাকার্ড শোভা পায় বিয়ের আসনে। অভিনব কায়দায় প্রতিবাদ জানিয়ে মাহমুদুল-সুমাইয়া নতুন দাম্পত্য জীবন শুরুর প্রক্রিয়াকে অনেকেই ব্যতিক্রম বলে মনে করছেন অনেকে। বিয়ের আসরে নবদম্পতির সহপাঠীরাও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে সেদিন স্লোগান দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাগারে বন্দি আছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী খাদিজাতুল ইসলাম কুবরা। তার মুক্তির জন্যই মূলত বিয়ের আসরে প্লাকার্ড হাতে দাঁড়ান মাহমুদুল। অন্যদিকে নববধূ সুমাইয়ার হাতে ছিল ‘এ্যবলিশ ডিএসএ (ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট)’ লেখা প্লাকার্ড।
জানতে চাইলে বর মাহমুদুল হাসান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আট মাসের বেশি কারাবন্দি আমার রাজনৈতিক সহকর্মী খাদিজা। তিনি কারাগারে কিডনি সমস্যায় ভুগছেন। অনেক চেষ্টা করেও তার জামিন হয়নি। তাই প্রতিবাদ হিসেবে আমরা বিয়ের আসরকে বেছে নিয়েছি।
মাহমুদুলের মা দিলরুবা খাতুন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, রাজনৈতিক সহকর্মীর মুক্তির দাবিতে ছেলে ও তার বন্ধুরা এ প্রতিবাদের আয়োজন করে। আমরা মৌন সমর্থন দিয়েছি।
কনে সুমাইয়ার বাবা খলিলুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মেয়ে ও তার স্বামী বিয়ের আসরে কী করেছে, তা আমরা জানি না।
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম জানান, বিয়ের আসরে নবদম্পতির ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের প্রতিবাদ বিষয়ে তাঁর জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলেও জানান।