বীরপ্রতীক তারামন বিবির তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ - দৈনিকশিক্ষা

বীরপ্রতীক তারামন বিবির তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক: বীরপ্রতীক তারামন বিবির তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তারামন বিবি ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে কুড়িগ্রাম জেলার চর রাজিবপুর উপজেলার শংকর মাধবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আবদুস সোহবান এবং মায়ের নাম কুলসুম বিবি। সাত ভাই-বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয় ছিলেন তারামন বিবি। তিনি লেখাপড়ার সুযোগ পাননি। কাজ করতেন অন্যের বাড়িতে।

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে রান্না, তাদের অস্ত্র লুকিয়ে রাখা এবং পাকিস্তানি বাহিনীর খবর সংগ্রহ করতেন ১৪ বছর বয়সী তারামন। রান্না করতে করতে অস্ত্র চালাতে শেখেন তিনি। তারপর রান্নার খুন্তি ফেলে রাইফেল হাতে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে অংশ নেন সম্মুখ সমরে। তারামন বিবি ১১ নং সেক্টরে নিজ গ্রামে ছিলেন। তখন ১১ নং সেক্টরের নেতৃত্বে ছিলেন সেক্টর কমান্ডার আবু তাহের। মুহিব হাবিলদার নামে এক মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবিকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য উৎসাহিত করেন। তিনি তারামনের গ্রামের পাশের একটি ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি তারামনকে ক্যাম্পে রান্নাবান্নার জন্য নিয়ে আসেন। তখন তারামনের বয়স ছিল মাত্র ১৩ কিংবা ১৪ বছর। পরবর্তীতে তারামনের সাহস ও শক্তির পরিচয় পেয়ে মুহিব হাবিলদার তাকে অস্ত্র চালনা শেখান।

এরপর একদিন দুপুরের খাওয়ার সময় তারামন ও তার সহযোদ্ধারা জানতে পারেন পাকবাহিনীর গানবোট তাদের দিকে আসছে। তারামন তার সহযোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নেন এবং তারা শত্রুদের পরাস্ত করতে সক্ষম হন।

বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন সরকার মুক্তিযুদ্ধে তারামন বিবিকে তার সাহসীকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ‘বীর প্রতীক’ উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তাকে খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষক বিমল কান্তি দে প্রথম তার সন্ধান পান। এ কাজে বিমল কান্তিকে সহায়তা করেন কুড়িগ্রামের রাজীবপুর কলেজের অধ্যাপক আবদুস সবুর ফারুকী।

বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মাত্র দু'জন নারীর মধ্যে তারামন বিবি একজন। 

এরপর নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা কয়েকটি সংগঠন তাকে ঢাকায় নিয়ে আসে। সেই সময় তাকে নিয়ে পত্রিকায় প্রচুর লেখালেখি হয়। অবশেষে ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ ডিসেম্বর তৎকালীন সরকার এক অনাড়ম্বর পরিবেশে আনুষ্ঠানিকভাবে তারামন বিবিকে বীরত্বের পুরস্কার তার হাতে তুলে দেন।

তারামন বিবিকে নিয়ে আনিসুল হকের লেখা ‘বীর প্রতীকের খোঁজে’ নামক একটি বই রয়েছে। আনিসুল হক রচিত ‘করিমন বেওয়া’ নামক একটি বাংলা নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র ছিলেন তারামন বিবি।

তারামন বিবির স্বামীর নাম আবদুল মজিদ। এই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন।

২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের আজকের এই দিনে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলা সদরের কাচারীপাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগে ভোগার পর মারা যান তিনি। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে কাচারীপাড়া তালতলা কবরস্থানে সমাধিস্থ করা হয়।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0060038566589355