দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক: রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের মূল পরিকল্পনাকারী অর্থ ও ইন্ধনদাতা হিসেবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবীকে চিহ্নিত করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য নবীর সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতকে এ তথ্য জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই আশরাফুল আলম।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) আসামি নবীকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে ডিবি। অন্যদিকে নবীর আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তিনদিনের রিমান্ডে পাঠান।
বিএনপি ও সমমনাদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরুর আগের রাতে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দিনগত রাত ৯টার দিকে রাজধানীর গোপীবাগে যশোরের বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে চলন্ত অবস্থায় আগুন দেওয়া হয়। আগুনে দুই নারী, এক শিশুসহ অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের কারও কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
রিমান্ড আবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, নবীকে গ্রেফতারের পর
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, নবী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী, অর্থদাতা ও ইন্ধনদাতা। অগ্নিসংযোগের ঘটনার সঙ্গে জড়িত অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের সঠিক নাম-ঠিকানা শনাক্তপূর্বক গ্রেফতার, অর্থের জোগনদাতা ও ঘটনার মূলরহস্য উদঘাটনের জন্য নবীকে সাতদিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।
আবেদনে বলা হয়েছে, মামলার এজহারনামীয় আসামি নবী উল্লাহ নবী ৫ নভেম্বর যাত্রাবাড়ী থানাধীন যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে ধোলাইপাড়গামী রাস্তার সড়কে বিজিবি মার্কেটের সামনে পাকা রাস্তার উপর বেআইনিভাবে দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্র-শন্ত্র, ইট পাটকেল, বাঁশের লাঠি ও ককটেলসহ অবস্থান নেন। তারা সরকারবিরোধী উসকানিমূলক ও অবমাননাকর স্লোগান দিতে থাকেন। সড়কে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে চরম জনভোগান্তি তৈরি হয়।
নবীসহ অন্য আসামিরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশে এবং সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ঘটনাস্থলে রাস্তার পাশে পার্কিং করা গ্রেট তুরাগ ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির দুটি বাসে অগ্নিসংযোগসহ ককটেল বিস্ফোরণ করে সড়কে দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাঁধায়। অগ্নিসংযোগে দুটি বাসের পাঁচ লাখ ৮০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।
রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়, আসামি নবী উল্লাহ নবীর নির্দেশ ও হুকুমে পলাতক নেতাকর্মীরাসহ অজ্ঞাতপরিচয় বিএনপির দুষ্কৃতকারীরা নাম না জানা অনেকের প্ররোচনা, নির্দেশনা, যোগসাজস এবং সহযোগিতায় বেআইনিভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে যান চলাচল বন্ধ করে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পুলিশের কাজে বাধাসহ পুলিশকে আক্রমণ এবং ককটেল বোমা বিস্ফোরণ ঘটান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অভিযানকালীন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামি নবী ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে আদালতকে জানিয়েছে ডিবি।