ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের বিরুদ্ধে করা আপিলে হারলেন শামীমা - দৈনিকশিক্ষা

ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের বিরুদ্ধে করা আপিলে হারলেন শামীমা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

নিজের ইচ্ছায় নয় বরং মানবপাচারের শিকার হয়ে সিরিয়া গিয়েছিলেন দাবি করে শামীমা বেগম যুক্তরাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তার সে দেশের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে যে আপিল করেছিলেন তাতে তিনি হেরে গেছেন।

গতবছর নভেম্বরে পাঁচ দিনব্যাপী আপিলের শুনানি হয় বলে জানায় বিবিসি। এরপর বুধবার যুক্তরাজ্যের বিশেষ অভিবাসন আপিল কমিশনের (এসআইএসি) বিচারক রবার্ট জে শামীমার আবেদন পুরোপুরি নাকচের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।

শামীমার আইনজীবীরা তাকে মানবপাচারের শিকার বলে আদালতে জোরাল যুক্তি দেখালেও বিচারক তার রায়ে সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে শামীমার নাগরিকত্ব পুনর্বহালের জন্য তার ‘পাচারের শিকার হওয়ার সম্ভাব্য কারণ’ কে অপর্য‍াপ্ত বলেছেন।

বিচারক বলেন, ‘‘যৌন শোষণের উদ্দেশে শামীমাকে সিরিয়ায় পাচার করা হয়ে থাকতে পারে এমন সন্দেহ বিশ্বাসজনক হলেও তা তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য কারণ হিসেবে অপর্যাপ্ত।”

তাছাড়া, সংবিধান অনুযায়ী, শামীমার নাগরিকত্ব ফেরত দেওয়ার মতো সংবেদনশীল বিষয় বিশেষ অভিবাসন আপিল কমিশন নয়; বরং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় বলে জানান বিচারক। একইসঙ্গে শামীমা বেগমের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করার সরকারি সিদ্ধান্ত আইনসিদ্ধ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এ রায়ের ফলে শামীমার যুক্তরাজ্যে ফেরা নিষিদ্ধই থেকে গেল। ২৩ বছর বয়সী শামীমাকে তাই সিরিয়ার উত্তরঞ্চলের শরণার্থী শিবিরেই থেকে যেতে হচ্ছে।

শামীমার আইনজীবীরা ‍অবশ্য এখনও আশা ছাড়েননি। তারা বলেছেন, ‘এই মামলা এখনো শেষে হয়নি’। তারা বুধবারের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে পুনরায় আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

আইএসে যোগ দিতে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে মাত্র ১৫ বছর বয়সে পূর্ব লন্ডনের আরো দুই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে সিরিয়া পালিয়ে যান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা।

২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে এক সাংবাদিক তাকে অন্তঃস্বত্তা অবস্থায় সিরিয়ার একটি ক্যাম্পে আবিষ্কার করেন। ‘আইএসআইএস বধূ’ হিসেবে আন্তর্জাতিক নানা গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে ওই সময় খবর প্রকাশ পায়।

শামীমা যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে দেশে ফেরার এবং সেখানে সন্তানের জন্ম দেওয়ার অনুমতি চান। কিন্তু তাকে সেই অনুমতি দেওয়া হয়নি। বরং ফেব্রুয়ারি মাসেই জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়। ওই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন সাজিদ জাভিদ।

কয়েকমাস পর শামীমা সিরিয়ার শরণার্থী ক্যাম্পে একটি পুত্র সন্তান্তের জন্ম দেন। কিন্তু শুরু থেকেই চরম অপুষ্টিতে ভোগা শিশুটি জন্মের কিছুদিন পর মারা যায়।

শামীমা তখন যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, এর আগে তিনি আরো দুটো সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। ওই শিশুদুটিই অল্প বয়সেই মারা যায়।

২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে শামীমা তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আপিল করেন।

২০২০ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তরাজ্যের আপিল আদালত শামীমার আবেদন গ্রহণ করে বলেন, শামীমাকে দেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া উচিত। নতুবা ‘একটি সুষ্ঠু ও কার্যকর শুনানি’ সম্ভব না।

সরকার তখন আপিল আদালতের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায় এবং সুপ্রিম কোর্ট আপিল আদালতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের যুক্তি ছিল, আপিল আদালত শামীমাকে দেশের ফেরার অনুমতি দেওয়ার যে রায় দিয়েছে সেখানে চারটি ত্রুটি রয়ে গেছে, যার বিরুদ্ধে আবার আপিল করেন শামীমা।

সরকারের নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানানোর পর শামীমা বেশ কয়েকবার নানা সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়ে তার অবস্থান জানিয়েছেন। সর্বশেষ বিবিসি তাকে নিয়ে ১০ পর্বের একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছে।

নানা মানবাধিকার সংগঠন থেকেও শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল করার সমালোচনা করা হয়েছে। কারণ, নাগরিকত্ব বাতিল হওয়ার কারণে এই তরুণী রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েছেন।

এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ১ ডিসেম্বর পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্প - dainik shiksha পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্প বিসিএসে আনুকূল্য পেতে যেচে তথ্য দিয়ে বাদ পড়ার শঙ্কায় - dainik shiksha বিসিএসে আনুকূল্য পেতে যেচে তথ্য দিয়ে বাদ পড়ার শঙ্কায় বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ছাত্রলীগ নেতাকে উপাচার্যের পিএস নিয়োগ - dainik shiksha বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ছাত্রলীগ নেতাকে উপাচার্যের পিএস নিয়োগ ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ জাল সনদে চাকরি করছেন এক বিদ্যালয়ের সাত শিক্ষক - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছেন এক বিদ্যালয়ের সাত শিক্ষক কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক ছাত্র আন্দোলনে নি*হত ৯ মরদেহ তোলার নির্দেশ - dainik shiksha ছাত্র আন্দোলনে নি*হত ৯ মরদেহ তোলার নির্দেশ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034308433532715