ভারতে বছরে দু'বার অ্যাডমিশন প্রক্রিয়া চালাতে পারবে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। গতকাল মঙ্গলবার দেশটির বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যান এম জগদেশ কুমার জানিয়েছেন, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই রেগুলার কোর্সে বছরে দু'বার পড়ুয়াদের ভরতি নিতে পারবে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। যে নিয়মটা গত বছর ওপেন এবং ডিসট্যান্স লার্নিংয়ের কোর্সের ক্ষেত্রে চালু করা হয়েছিল। একবার জুলাইয়ে অ্যাডমিশন চলেছিল। তারপর ফের জানুয়ারিতে ভরতি নেওয়া হয়েছিল। আর সেই ধাঁচেই এবার রেগুলার কোর্সেও কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বছরে দু'বার ভরতি নিতে পারবে।
ইউজিসির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, গত ৫ মে ইউজিসির বৈঠকে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এতদিন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বছরে একবার অ্যাডমিশন প্রক্রিয়া চলত। প্রতি বছর জুলাই-আগস্টে রেগুলার কোর্সের ক্লাস শুরু হয়। শেষ হয় মে-জুন মাসে। ভারতের সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সেই শিক্ষাবর্ষ মেনেই ক্লাস নেয়।
ইউজিসির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, গত বছর থেকে ওপেন ও ডিসট্যান্স লার্নিংয়ের কোর্সে দু'বার অ্যাডমিশনের নিয়ম চালু করার পরে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। ইউজিসির পোর্টালে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির তরফে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তাতে জুলাইয়ে ১৯ লাখ ৭৩ হাজার ৫৬ জন পড়ুয়া ভরতি হয়েছিলেন। আর জানুয়ারিতে বিভিন্ন কোর্সে অ্যাডমিশন নিয়েছিলেন ৪ লাখ ২৮ হাজার ৮৫৪ জন পড়ুয়া।
ওপেন ও ডিসট্যান্স লার্নিংয়ের কোর্সে সেই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রেগুলার কোর্সেও প্রতিটি শিক্ষাবর্ষে দু'বার অ্যাডমিশনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে বছরে দু'বার ভরতি প্রক্রিয়া চালাতেই হবে, সেরকম কোনও বাধ্যবধকতা রাখা হচ্ছে না। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের পরিকাঠামো বিচার করে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। যদি পর্যাপ্ত পরিকাঠামো এবং শিক্ষক থাকেন, তাহলে অনায়াসে সেই পথে হাঁটতে পারে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
তিনি বলেন, যদি ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বছরে দু'বার ভরতি নেয়, তাহলে প্রচুর পড়ুয়া লাভবান হবেন। বোর্ড পরীক্ষার রেজাল্ট ঘোষণা করতে দেরি হওয়ার কারণে যাঁরা জুলাই-অগস্টে ভরতি হতে পারেননি, স্বাস্থ্যগত কারণে ভরতি হতে পারেননি অথবা ব্যক্তিগত কারণে ওই সময় অ্যাডমিশন নিতে পারেননি, তাঁরা অত্যন্ত লাভবান হবেন। বছরে দু'বার অ্যাডমিশন প্রক্রিয়া চললে প্রতি বছরে দু'বার ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্টের সুযোগ পাবে বিভিন্ন সংস্থাগুলি। তার ফলে স্নাতক উত্তীর্ণদের চাকরির সুযোগ বাড়বে।
সেইসঙ্গে তিনি জানিয়ছেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে দু'বার অ্যাডমিশন প্রক্রিয়া চলে। ভারতের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সেই পথে হাঁটলে আন্তর্জাতিক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে সমন্বয় আরও বাড়বে। বৈশ্বিক স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে পাল্লা দেবে ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা।