এবারও ভারতীয় দুই প্রকাশককে দেয়া হয়েছে প্রায় ১ কোটি পাঠ্যবই ছাপার কাজ। তবে ভারতীয় প্রকাশকদের দেশের বই ছাপাতে দেয়াকে সমর্থন করেন না ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি। দেশের শিক্ষাবিষয়ক পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিচালিত তাৎক্ষণিক এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জরিপে অংশ নেয়া মাত্র ৭ শতাংশ মানুষ মনে করেন ভারতীয় প্রকাশকদের বই ছাপাতে দেয়া উচিৎ হয়েছে। আর বাকি ১ শতাংশ মানুষ পক্ষে-বিপক্ষে কোনো মত দেননি।
গত ১২ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দৈনিক শিক্ষাডটকমের ফেসবুক পেজে এ জরিপ চলানো হয়। জরিপে প্রশ্ন করা হয়, এবারও ভারতীয় প্রকাশকরা বাংলাদেশের পাঠ্যবই ছাপবে, সঠিক বলে মনে করেন কি?
জরিপে ‘হ্যাঁ’ এবং ‘না’–এর পাশাপাশি ‘মন্তব্য’ নেই এমন একটি ঘর ছিলো। ফেসবুকে পরিচালিত এই জরিপে অংশ নিয়েছেন ১ হাজার ৮ জন। ‘না’ ভোট দিয়েছেন ৯২৪ জন এবং ‘হ্যাঁ’ ভোট দিয়েছেন ৬৪ জন মানুষ। একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একবারই ভোট দেয়ার সুযোগ ছিলো।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে আওয়ামী লীগ সরকার ভারতীয় প্রকাশকদের দিয়ে পাঠ্যবই ছাপানো শুরু করেছিলো।
পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সিন্ডিকেট এখনো সক্রিয় থাকায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাথমিকের প্রায় এক কোটি পাঠ্যবই ছাপবে ভারতীয় প্রিতম্বর বুকস প্রাইভেট লিমিটেড ও পাইওনিয়ার প্রিন্টার্স নামের দুই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। দেশের প্রকাশকদের বাদ দিয়ে ভারতীয় প্রকাশকদের বই ছাপাতে দেয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকেই। এমন প্রেক্ষাপটে জরিপ চালায় দেশর একমাত্র শিক্ষাবিষয়ক ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম।
আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান ও মূল্যায়ন শেষ করে ১৭টি লটে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণির বই ছাপার কাজ পেয়েছে ভারতীয় এই দুই প্রকাশক। দুই তিন মাস আগে এই অপকর্মের পেছনে ছিলেন দীপু মনির ভাই টিপু এবং পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম ও এনসিটিবির তথ্যজ্ঞ বেসরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার সিন্ডিকেটের পছন্দের মোসা. নাজমা আখতার। যিনি এনসিটিবির সচিব। আরো আছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষার সচিব ফরিদ আহম্মদ।
গত জুলাই মাসে এই সিন্ডিকেটে যুক্ত হয়েছেন গত ১২ বছর ধরে দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পুরো পরীক্ষা ব্যবস্থা ধবংসের কারিগর অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী। তিনি এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) হিসেবে আছেন জুলাই থেকে। রবিউলের স্ত্রী-সন্তানসহ অনেকেই বিদেশে। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও দীপু মনির খুবই পছন্দের লোক রবিউল। প্রকল্পের অধীনে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিটের প্রধান ছিলেন এক যুগের বেশি।
পাঠ্যপুস্তক ছাপায় বিশেষজ্ঞ শিক্ষা ক্যাডারের একাধিক অধ্যাপক দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, বিন্দুমাত্র যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা না থাকলেও শুধু ছাত্রলীগ নেত্রী পরিচয়ে আর সিন্ডিকেটের ইশারায় চলার নিশ্চয়তায় পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব পদে প্রেষণে নিয়োগ পাওয়া দীপু মনি পছন্দের শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা নাজমা আখতার এখনো বহাল আছেন, কলকাঠি নাড়ছেন।