দৈনিক শিক্ষাডটকম, জবি : ভালোবাসা দিবসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার ক্যাম্পাসে সরস্বতী পূজা, বসন্তবরণ উপলক্ষে উৎসবমুখর পরিস্থিতি বিরাজ করছিলো ক্যাম্পাসে। তবে সন্ধ্যার পর প্রথমে ক্যাম্পাস সংলগ্ন বাহদুর শাহ পার্কে, ক্যাম্পাসের গেটের সামনে এবং পরে ক্যাম্পাসের ভেতরে দুই গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে দুই গ্রুপের প্রায় ১২-১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীর সঙ্গে আগে অ্যাকাউন্টটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিবাদ বাঁধে। এ ঘটনার পর গত মঙ্গলবার দুপুরে অ্যাকাউন্টটিং বিভাগেই ওই ছেলেকে মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজির গ্রুপের নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার সূত্র ধরে বুধবার সন্ধ্যায় প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ইব্রাহীম ফরাজী গ্রুপের নেতাকর্মীদের (নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগ) ওপর অতর্কিত হামলা করে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন গ্রুপের নেতাকর্মীরা।
এরপর প্রধান ফটকের সামনে আরেক দফা মারামারি হয়। এসময় সভাপতি ফরাজি গ্রুপের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের তাফসির, নিরব ও বাতেন বিল্লাহ, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের গাজী সামসুল হুদা, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল বারেকসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। আঘাত পেয়ে বাতেন বিল্লাহর দাঁত পড়ে যায়। এছাড়াও তাফসির মাথায় ও নিরব হাতে আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।
পরবর্তীতে সভাপতি গ্রুপের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে সাধারণ সম্পাদক আকতারের গ্রুপের কর্মীদের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করেন। এতে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের নিয়ামত, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের অনন্ত, কলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের মিরাজ হোসেন, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শেখ রিফাত আব্দুল্লাহ, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের তামিম ইকবালসহ আরো অনেকে আহত হন। এরপর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইন ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে আহত তাফসির জানান, মঙ্গলবার আমার এক বান্ধবীকে উত্ত্যক্ত করা হলে আমি তার প্রতিবাদ করি। তারই জেরে এই ঘটনা।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাদের এক ছাত্রী বোনকে নিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে। ক্যাম্পাসে কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি। প্রয়োজনে ক্যাম্পাসের সিসিটিভি ফুটেজ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে দেখতে পারেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা সিসিটিভি দেখে শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবো।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ক্যাম্পাসের বাইরে মারামারি হয়েছে। সেটার রেশ ক্যাম্পাসের ভেতরে ছিলো। এ ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।