টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ব্যানারে ওই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। একাত্মতা ঘোষণা করে কর্মচারী সমিতির নেতারা, ছাত্রলীগ নেতারা এ মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব স্থাপনার বাইরে অন্য প্রতিষ্ঠানে প্রভাষক নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজনের নিন্দা জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম সাইফুল্লাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন বর্তমান স্বেচ্ছাচারী মনোভাব নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেন। যেগুলো বাকিরা সমর্থনও করেন না এবং জানেনও না। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা নিয়োগ বোর্ড হচ্ছে যেটার পরীক্ষা হচ্ছে ঢাকায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত অবকাঠামো সুবিধা এবং বর্তমানে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে প্রভাষক
নির্বাচনী পরীক্ষার আয়োজন-মাভাবিপ্রবির জন্য যেমন অমর্যাদাকর তেমনি আমাদের সবার জন্য মানহানিকর। উনি এখানে এ নিয়োগ পরীক্ষা নিচ্ছেন না এবং একেক সময় এ বিষয়ে একেক কথা বলেন যে এই সমস্যা, সেই সমস্যা। আমরা সন্দেহ করছি যে এর পেছনে উনার কোনো এজেন্ডা আছে। তার কারণ উনি বায়োকেমিস্ট্রি, মলিকিউলার বায়োলজি এবং ফার্মেসিতে একজন করে প্রভাষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি ছিলো। কিন্তু উনি দুইজনের পরিবর্তে সেখানে চারজন নিয়েছেন, যেটা সম্পূর্ণ অবৈধ। আইনগতভাবে এটা উনি করতে পারেন না। এই অনৈতিক কাজ করার পর উনি যে বোর্ড বিভিন্ন জায়গায় দিচ্ছেন সেটা আমাদের মনে একটা সন্দেহ সৃষ্টি করেছে।
তিনি আরো বলেন, তিনি প্রায়ই শিক্ষকদের সম্পর্কে আপত্তিকর বিভিন্ন মন্তব্য করেন। আমাদের মহিলা সহকর্মীরাও তা নিয়ে বিব্রত বোধ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে গত দুই বছরে উন্নয়ন কাজ কিছুই হয়নি। এসব নিয়ে শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীসহ সকল কর্মচারীদের মাঝে ক্ষোভ আছে।
তিনি বলেন, আমরা এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করি। এখানে আমাদের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করে কর্মচারী সমিতির প্রতিনিধিরা ছিলেন, আমাদের ছাত্ররা, ছাত্রলীগের নেতারা এই তুমুল বৃষ্টিতেও আমাদের সঙ্গে ছিলেন মানববন্ধনে।
তিনি জানান, আমরা আমাদের বিবৃতি ভাইস চ্যান্সেলরকে পাঠিয়েছি কিন্তু তার পক্ষ থেকে এখনো কোনো উত্তর পাইনি। আমরা আগেও উনাকে জানিয়েছিলাম যে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া যেন প্রত্যাহার করতে এবং আরো কিছু বিষয় সম্পর্কে আমাদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটা স্বচ্ছ ধারণা দেয়ার কথা বলা হয়েছিলো। কিন্তু উনি আমাদের কোনো কিছু দেননি। আমাদের মানববন্ধনের কর্মসূচি আমরা শেষ করেছি। আগামীকাল সোমবার আমাদের নির্বাহী কমিটির সভা বসবে এবং পরবর্তী কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মানববন্ধন বক্তব্য রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম সাইফুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান, নির্বাহী সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক, সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আহসান হাবিব, কোষাধ্যক্ষ ড. খাইরুল ইসলাম, যুগ্ম-সম্পাদক ড. অনিমেষ সরকার, দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ জসীম উদ্দিন, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক ড. জয়নুল আবেদীন, নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক ডক্টর লুৎফুননেছা বারি, অধ্যাপক ড. ফজলুল করিম, ড. আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ অনেকে।