দৈনিক শিক্ষাডটকম, চবি : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেণু কুমার দের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে তিনদিনের অবস্থান কর্মসূচির পর এবার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক অনশনে বসেছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা অনশন শুরু করেন।
চবির আইন ১৯৭৩ লঙ্ঘন করে প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও বাংলা ও আইন বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ এবং দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহতভাবে চলমান ব্যাপক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ এসকল শিক্ষকরা।
শিক্ষক সমিতি কর্মসূচির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের (হলুদ দল) আহ্বায়ক এবং কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেকান্দর চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয় সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হোক। ১৯৭৩ এর আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় চলুক। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন সে জায়গা থেকে সরে এসেছে। সেজন্য শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যাণে, অন্যায়ের বিপক্ষে কর্মসূচি পালন করছে। আমরা তাদের সকল যৌক্তিক কর্মসূচির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি।’
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হক বলেন, উপাচার্য স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে অবৈধভাবে নিয়োগ দিচ্ছেন। শিক্ষক সমিতির সভাপতির সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। ইতোমধ্যে তিনি বিভিন্ন অন্যায় অনিয়মের সাথে জড়িত হয়েছেন। উপাচার্য উপ-উপাচার্য তাদের নীতি-নৈতিকতা হারিয়েছেন। সুতরাং তাদের অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, আইন ও বাংলা বিভাগের নিয়োগ দেয়ার জন্য উপাচার্য উদগ্রীব হয়ে পড়েছেন। তিনি আমাদের কোনো বক্তব্যও শুনতে চান নি। এমনকি তিনি রাতের আঁধারে উপাচার্যের বাংলোতে নিয়োগ বোর্ড বসান। আমরা মনে করছি, উপাচার্য তার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন। সুতরাং, তার পদত্যাগ ছাড়া বিকল্প নেই। তার পদত্যাগ পর্যন্ত আমরা আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
এর আগে গত রোববার চবির আইন ও বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড বাতিলের দাবিতে শিক্ষক সমিতি অবস্থান নিলে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকীর সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে দিনভর এ নিয়োগকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা দেখা যায় শিক্ষকদের মধ্যে।
শিক্ষকদের অবস্থানের মুখে পড়ে ওইদিন উপাচার্যের কার্যালয় থেকে উপাচার্যের বাংলোতে নিয়োগ বোর্ডের স্থানান্তর করলে সন্ধ্যায় শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষক সমিতির নেতারা। এসময় উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে কর্মসূচি ঘোষণা করে শিক্ষক সমিতি।