ভারতীয় সঙ্গীত জগতের পুরোধা ব্যক্তিত্ব ও বিশ্বশিল্পী ভূপেন হাজারিকার জন্মদিন আজ। তিনি ছিলেন অত্যন্ত দরাজ গলার অধিকারী। অসমীয়া চলচ্চিত্রে সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে গানের জগতে প্রবেশ করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে বাংলা ও হিন্দি ভাষায় গান গেয়ে ভারত এবং বাংলাদেশে অসম্ভব জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে বিবিসি বাংলার শ্রোতা জরিপে তার ‘মানুষ মানুষের জন্যে’ গানটি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিশটি বাংলা গানের তালিকায় ২য় স্থান লাভ করে।
ভূপেন হাজারিকা ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে আসামের সদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম নীলকান্ত হাজারিকা, মায়ের নাম শান্তিপ্রিয়া হাজারিকা। ব্যক্তিগত জীবনে ভূপেন হাজারিকা কানাডায় বসবাসরত প্রিয়ম্বদা প্যাটেলকে বিয়ে করেন।
ভূপেন ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে গুয়াহাটির কটন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট আর্টস, কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে বিএ এবং ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পাস করেন। পরবর্তী সময়ে ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার গবেষণার বিষয় ছিলো ‘প্রাপ্তবয়স্কদের শিক্ষায় শ্রবণ-দর্শন পদ্ধতি ব্যবহার করে ভারতের মৌলিক শিক্ষাপদ্ধতি প্রস্তুতি-সংক্রান্ত প্রস্তাব’।
ভূপেন হাজারিকার গানগুলোতে মানবপ্রেম, প্রকৃতি, ভারতীয় সমাজবাদের, জীবন-ধর্মীয় বক্তব্য বিশেষভাবে লক্ষণীয়। এছাড়াও, শোষণ, নিপীড়ন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ প্রতিবাদী সুরও উচ্চারিত হয়েছে বহুবার। তার উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে- ‘আজ জীবন খুঁজে পাবি’, ‘আমি এক যাযাবর’, ‘আমায় ভুল বুঝিস না’, ‘একটি রঙিন চাদর’, ‘ও মালিক সারা জীবন’, ‘গঙ্গা আমার মা’, ‘প্রতিধ্বনি শুনি’, ‘মানুষ মানুষের জন্যে’, ‘সাগর সঙ্গমে’, ‘হে দোলা হে দোলা’ ও ‘চোখ ছলছল করে’ প্রভৃতি। কিংবদন্তি এই সংগীত শিল্পী ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ৫ নভেম্বর পরলোকগমন করেন।