দৈনিকশিক্ষাডটকম, ডুমুরিয়া (খুলনা) : খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষক ও সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ফের মন্ত্রী হয়েছেন। নতুন মন্ত্রিসভায় ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব তিনি। সাবেক এ শিক্ষক পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নতুন মন্ত্রীদের দায়িত্ব বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসন খুলনা-৫। ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য মন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন ইউসুফের মৃত্যুর পর প্রথম বার উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সবার প্রিয় শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। তারপর একাধারে চারবার তিনি জনগণের ভালোবাসা নিয়ে সংসদে এ এলাকার প্রতিনিধিত্ব।
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার উলা গ্রামের স্বর্গীয় কালীপদ চন্দের মেঝ ছেলে। ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দের ১২ মার্চ তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মা ছিলেন স্বর্গীয়া রেণুকা বালা চন্দ। উলাগ্রামের পাঠশালায় তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু। বান্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক্যুলেশন পাশ করেন। ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে দৌলতপুর বিএল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স এবং ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে একই বিষয়ে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন।
মাস্টার্সের ফল প্রকাশের আগেই নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ডুমুরিয়ার সাহস নোয়াকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে এই স্কুল থেকে সর্বপ্রথম শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পায়। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ৭ মে ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর প্রচেষ্টায় ডুমুরিয়ায় এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র চালু হয়। এর আগে খুলনা শহরে শিক্ষার্থীদেরকে পরীক্ষা দিতে হতো। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বিএড পাস করেন। তিনি ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের ১১ মার্চ শিক্ষকতা থেকে অবসর নেন। তার স্ত্রী উষা রানী চন্দও স্কুল শিক্ষক। তার বড় ছেলে অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র চন্দ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য।
১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ করতে প্রতিষ্ঠা করেন থানা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। তিনি প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে চন্দ্র চন্দ পর্যন্ত দুই দশক ধরে তিনি ওই পদের দায়িত্বে ছিলেন।