বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্রদের মেরে শেষ করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন শিক্ষক নামের কলংক দুইজন বিতর্কিত সাবেক ভিসি। গত ৩ আগস্ট শেখ হাসিনাকে যারা এমন পরামর্শ দেন তাদের মধ্যে একজন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মশিউর রহমান এবং আরেকজন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ। বর্তমানে দুইজনই পলাতক।
বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত খবরে জানা যায়, ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় বেশ কয়েকজন উপাচার্য, সিনেট সদস্য ও অধ্যক্ষকে গণ ভবনে ডেকেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই বৈঠকে উদ্ভোধনী বক্তব্য দেন সাবেক ভিসি অধ্যাপক হারুন-অর-রশীদ। প্রথমেই তিনি পরামর্শ দেন গুলি চালানোসহ যেকোনো মূল্যে এই আন্দোলন শেষ করতে হবে। এরপরই বক্তব্য দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান। তিনিও প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আন্দোলনকারী যেই হোক না কেন মেরে শেষ করে দিতে হবে। কোনো ছাড় নেই। তারা রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করতে চায়।’
৩ আগস্ট গণ ভবনে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক ভিসি ও কলেজ অধ্যক্ষ এসব তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। হারুন ও মশিউরের অমন নিষ্ঠুর ও স্বৈরাচারী মনোভাব প্রকাশ দেখে অবাক হয়েছেন কয়েকজন কলেজ অধ্যক্ষ। একান্ত আলোচনায় তারা বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন।
বৈঠকে হারুন ও মশিউর ছাড়া আর কেউ কোনো কথা বলার সুযোগ পাননি বলেও জানা গেছে। বাদবাকীরা শেখ হাসিনার নির্দেশনা শুনেছেন চলে গেছেন।
৩ আগস্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার এক সংবাদে বলা হয়, বৈঠক শেষে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি এম এম ইমরুল কায়েস জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা ২০ মিনিট পর্যন্ত প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে এ সভা হয়। বৈঠকে কোটাবিরোধী আন্দোলনের ফলে সৃষ্ট সার্বিক পরিস্থিতি এবং তা থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় অশুভ শক্তির কবল থেকে শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনতে শিক্ষকরা অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক, এআইইউবি, নর্থ সাউথ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি, অতীশ দীপংকর ইউনিভাসিটি ও সাউথ ইস্টসহ ২৪টি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সিনেট সদস্য এবং সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি বাংলা কলেজ ও ইডেন কলেজসহ ২৩টি কলেজের অধ্যক্ষ উপস্থিত ছিলেন।
পলাতক থাকায় মশিউর ও হারুনের মতামতা নেওয়া সম্ভব হয়নি।