কুমিল্লার লালমাই উপজেলার ফয়েজগঞ্জ সিনিয়র আলিম মাদরাসায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
গত বুধবার ওই পদের ৫ জন পরীক্ষার্থী ফলাফল বাতিল করতে লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত আবেদন করেছেন।
অভিযোগের বিবরণ ও মাদরাসা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১ মে ফয়েজগঞ্জ সিনিয়র আলিম মাদরাসায় অধ্যক্ষসহ ৪টি পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষায় অধ্যক্ষ পদে ১০ জন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ১৪ জন, নিরাপত্তাপ্রহরী পদে ৪ জন ও আয়া পদে ৩ জন অংশগ্রহণ করেছেন। পরীক্ষা শেষে মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের উপস্থিতিতে নিয়োগ বোর্ডের সদস্য, মাদরাসা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন) জিয়াউল আহসান অধ্যক্ষ পদে মাওলানা মুহিবুল্লাহ, অফিস সহকারী পদে এরশাদ হোসেন, নিরাপত্তাপ্রহরী পদে শরিফুল ইসলাম ও আয়া পদে আলেয়া বেগমকে ডেকে নিয়ে উত্তীর্ণ ঘোষণা করেন। এরপরই ৪টি পদে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী, অভিভাবক সদস্য, মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
তাদের অভিযোগ উত্তীর্ণরা আগেই প্রশ্ন পেয়ে গেছেন। অধ্যক্ষ পদে উত্তীর্ণ মুহিবুল্লাহ মাদরাসা বোর্ডের উচ্চ পদস্থ একজন কর্মকর্তার সুপারিশে চাকরি পেয়েছেন। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে উত্তীর্ণ এরশাদ হোসেন এই মাদরাসায় পড়াকালীন আরবি প্রভাষক কাউছার আলমকে লাঞ্চিত করার ঘটনা ঘটেছিল। নিরাপত্তাপ্রহরী পদে পরীক্ষায় প্রথম না হওয়ার পরেও মাদরাসার সভাপতির একক সিদ্ধান্তে শরিফুল ইসলামকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।
গত বুধবার দুপুরে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী জামাল হোসেন, কামরুল হাসান, সালেহ আহমেদ, শাহাদাত, নাছির উদ্দিন লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। আবেদনে তারা উল্লেখ করেছেন, ১৪ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও লিখিত পরীক্ষায় পাস করেছে ৭ জন। তাদের সবাইকে কম্পিউটার টাইপিংয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষা নেয়া হয়েছিল। সবাই টাইপিংয়ে ভালো করেছে। তবে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীসহ কেউই আরবি টাইপিংয়ে ভালো করতে পারেননি। পরবর্তীতে অজ্ঞাত কারনে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীসহ ৩ জনের মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়। বাকি ৪ জনকে ডাকা হয়নি। এ ছাড়া অন্য ৩টি পদের রেজাল্ট সবার সামনে প্রকাশ করলেও অফিস সহকারী পদের রেজাল্ট একঘণ্টা বিলম্বে গোপনীয়ভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ উত্তীর্ণ এরশাদ হোসেনকে অর্থের বিনিময়ে আগেই প্রশ্ন জানিয়ে দেয়া হয়েছিল এবং এরশাদের জমা দেয়া পরীক্ষার খাতাটির সঙ্গে তার হাতের লেখা যাচাই করা প্রয়োজন।
অফিস সহকারী পদে অনিয়মের অভিযোগকারীদের একজন কামরুল হাসান বলেন, সিলেক্টেড এরশাদ হোসেনকে আগেই টাকার বিনিময়ে চুক্তি অনুযায়ী প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়েছে। তিনি মাদরাসার আরবি প্রভাষক কাউছার আলম স্যারকে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে লাঞ্চিত করেছিলেন। ফলাফল বাতিলের দাবিতে আমরা ইউএনও স্যারের কাছে লিখিত আবেদন করেছি। ফয়েজগঞ্জ সিনিয়র আলিম মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাহমিনা রহমান বলেন, প্রশ্ন তৈরি করার সময় একটি লোকও দরজার বাইরে যায়নি। একদম স্বচ্ছভাবে পরীক্ষা হয়েছে। এখনো নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন। রেজুলেশনের মাধ্যমে গভর্নিং বডির সদস্যদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে নিয়োগ চূড়ান্ত হবে।
মাদরাসার গভর্নিং বডির বিদ্যুৎসাহী সদস্য হারুনুর রশিদ বলেন, আয়া ছাড়া বাকি ৩টি পদেই অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে সিনিয়র নেতাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
ফয়েজগঞ্জ সিনিয়র আলিম মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি এম এ রহমান বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় কোনো অনিয়ম হয়নি। তারপরও কারও কাছে অনিয়মের তথ্য-প্রমাণ থাকলে আমাকে জানালে ব্যবস্থা নেবো।
লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফোরকান এলাহী অনুপম বলেন, নিয়োগ পরীক্ষাটি তাদের ডিপার্টমেন্ট ওয়ারী। তার সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা নেই। নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষার দাবিতে আজ (বুধবার) দু’জন পরীক্ষার্থী কয়েকজন পরীক্ষার্থীর পক্ষ নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। মাদরাসার