মাধ্যমিকে ব্যবহারিক ক্লাসের গুরুত্ব ও পদ্ধতি - দৈনিকশিক্ষা

মাধ্যমিকে ব্যবহারিক ক্লাসের গুরুত্ব ও পদ্ধতি

মো. আইয়ুব আলী |

২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, ১টি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধিনে প্রায় পৌনে ২১ লাখ শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। এ সকল শিক্ষার্থীর বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে রয়েছে ব্যবহারিক বিষয়। বিদ্যালয়ে ব্যবহারিক ক্লাসের মাধ্যমে হাতে কলমে শিক্ষার্থীদের দিয়ে এক্সপেরিমেন্ট সম্পন্ন করানো হয় এবং পাবলিক পরীক্ষাগুলোতেও ব্যবহারিক পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। ব্যবহারিক বা হাতে কলমে কোনো এক্সপেরিমেন্ট সম্পন্ন করানোর মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর শিখন স্থায়ী হয় এবং শিক্ষার্থী শিখনে আগ্রহী হয়ে উঠেন। শিক্ষার্থীর মধ্যে অনুসন্ধিৎসু জ্ঞান জাগ্রত হয় এবং প্রকৃতিতে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনাবলি নিয়ে চিন্তা করতে আগ্রহী হন। কিন্তু বর্তমান ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগে এসে আমরা যখন উপলব্ধি করতে পারছি যে, ব্যবহারিক তথা হাতে কলমে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু বা বর্তমান সরকারও যখন কর্মমুখী শিক্ষার প্রতি জোর দিয়েছে সে সময়ে এসেও আমরা পাবলিক পরীক্ষায় নামমাত্র ব্যবহারিক পরীক্ষা নিয়ে থাকি।

বিদ্যালয়ে সারা বছর ব্যবহারিক ক্লাসে করানো এক্সপেরিমেন্টগুলোই মূলত ব্যবহারিক খাতায় সংরক্ষণ করা হয় এবং পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে তা প্রদর্শন করানো হয়। প্রতটি বিদ্যালয়ে কৃষি বিষয়ের শিক্ষক রয়েছেন। এ ছাড়াও রয়েছেন বিজ্ঞান ও অন্যান্য বিষয়ের শিক্ষক। আমরা কজন শিক্ষক কৃষি বিষয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট হাতে কলমে করানোর জন্য শিক্ষার্থীদের মাঠে নিয়ে যাই, অথবা কজন বিজ্ঞানের শিক্ষক নিয়মিত ল্যাবে বিজ্ঞানের ব্যবহারিক ক্লাসে এক্সপেরিমেন্ট সম্পন্ন করান তার আনুমানিক জরিপ না-ই বা বললাম। পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে যেখানে ব্যবহারিক পরীক্ষায় শুধু এক্সপেরিমেন্টের চিত্র অংকন ও বর্ণনা লিখলেই হয়ে যায়, হাতে কলমে এক্সপেরিমেন্ট করে দেখাতে হয় না। সেখানে শিক্ষার্থীরাও নিয়মিত ব্যবহারিক ক্লাস করুক বা না করুক পুরাতন ব্যবহারিক খাতা দেখে চিত্রগুলো অংকন করে ব্যবহারিক খাতা জমা দেন। যখন পাবলিক পরীক্ষাগুলোতেই ব্যবহারিক পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি গতবাঁধা নিয়মে তখন শিক্ষকই বলুন আর শিক্ষার্থীরাই বলুন কারোরই ব্যবহারিকের প্রতি গুরত্বটা সেভাবে আসে না। শুধুমাত্র উত্তরপত্রে এক্সপেরিমেন্টের চিত্র অংকন করে বর্ণনা লিখতে পারলেই কি একজন শিক্ষার্থীকে যথাযথ মূল্যায়ন করা সম্ভব যে তিনি বিষয়টা পুরোপুরি বুঝেছেন? 

আমরা যদি ব্যবহারি বিষয়ের প্রতি গুরত্ব দিতে চাই তাহলে আমাদের মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে শিক্ষাবোর্ডগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। একজন শিক্ষার্থী হাতে কলমে বিভিন্ন পরীক্ষণ সম্পন্ন করতে পারে কি না তা মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনীয় উপকরণসমৃদ্ধ ল্যাব প্রয়োজন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এতোগুলো শিক্ষার্থীদের অল্প সময়ের মধ্যে কীভাবে হাতে কলমে ব্যবহারিক পরীক্ষার আয়োজন করা সম্ভব। 

আসলে ৩ ঘণ্টার পরীক্ষায় একটা কেন্দ্রের সকল শিক্ষার্থীকে হাতে কলমে ব্যবহারিক পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে শিক্ষাবোর্ডগুলো ব্যবহারিক পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন করতে পারে। হতে পারে এমন যে প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষার সঙ্গে ব্যবহারিক পরীক্ষা না নিয়ে বছরে একবার বা দুইবার নির্দিষ্ট কেন্দ্রে ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে যেখানে রুটিন অনুযায়ী উক্ত কেন্দ্রের অধিন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা হাতে কলমে ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নেবে এবং বোর্ড কর্তৃক মনোনিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞ সিনিয়র শিক্ষক মহোদয় এক্সটার্নাল-ইন্টার্নালের দায়িত্ব পালন করবেন। ফলে প্রতটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক ক্লাসের প্রতি আগ্রহী হবেন। অথবা এর চাইতেও ভালো কোনো পদ্ধতি শিক্ষাবোর্ডগুলো অনুসরণ করতে পারে। তবে প্রচলিত খাতা কলমের ব্যবহারিক পরীক্ষা পদ্ধতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে এবং হাতে কলমে ব্যবহারিক পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করতে হবে। 

লেখক : শিক্ষক, জকিগঞ্জ, সিলেট 

 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল   SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।

চট্টগ্রামে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২ - dainik shiksha চট্টগ্রামে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২ ঢামেকে একজনের মৃত্যু - dainik shiksha ঢামেকে একজনের মৃত্যু জবির কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ৪ - dainik shiksha জবির কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ৪ বেরোবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০০ - dainik shiksha বেরোবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০০ শহীদ মিনার এলাকায় অধ্যাপককে মারধর - dainik shiksha শহীদ মিনার এলাকায় অধ্যাপককে মারধর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে : কাদের - dainik shiksha সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে : কাদের সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই: ঢাবি উপাচার্য - dainik shiksha সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই: ঢাবি উপাচার্য যারা নিজেদের রাজাকার বলেছে তাদের শেষ দেখে ছাড়বো - dainik shiksha যারা নিজেদের রাজাকার বলেছে তাদের শেষ দেখে ছাড়বো সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ - dainik shiksha সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে - dainik shiksha র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039541721343994