ছাত্রলীগের মিছিলে না যাওয়ায় নাটোরের বড়াইগ্রাম সরকারি অনার্স কলেজের ৩ ছাত্রকে কান ধরে উঠবস করানোর অভিযোগ উঠেছে। গত রবিবার কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শিপন আহমেদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে। যদিও আজ মঙ্গলবার বিষয়টি জানাজানি হয়।
শিপন আহমেদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের অনিয়মিত ছাত্র। তাঁর ছাত্রত্ব নিয়েও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। ছয় বছর ধরে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করা শিপন নিজেকে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বললেও শিক্ষকেরা তাঁর ছাত্রত্ব নিয়ে সন্দিহান। শিপন তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
জানা গেছে, রবিবার কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের পাঠদানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল। নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাতে কলেজে মিছিলের আয়োজন করে ছাত্রলীগ। ক্লাস থাকায় ওই মিছিলে যেতে পারেননি কলেজের একটি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের তিন শিক্ষার্থী। কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শিপন আহমেদ কয়েকজন সহযোগীসহ ওই শিক্ষার্থীদের মিছিলে না যাওয়ার কৈফিয়ত চান। শিক্ষার্থীরা ক্লাসের কথা বলে শিপনের কাছে ক্ষমা চান। তখন শিপন আহমেদ তাঁদের পাঁচবার করে কান ধরে উঠবস করার নির্দেশ দেন। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের সামনে তাঁরা কান ধরে উঠবস করেন।
ভয়ে ও লোকলজ্জায় ঘটনাটি তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষকদের জানাননি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। কলেজের অধ্যক্ষ ঢাকায় থাকায় বিষয়টি সবাই এড়িয়ে যান। আজ অধ্যক্ষের কলেজে আসার খবরে কান ধরে উঠবসের ঘটনাটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। ছাত্র-শিক্ষকেরা বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের নজরে আনেন।
ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের সঙ্গে যা করা হয়েছে, তা খুবই লজ্জাজনক ও ভয়ের। শিপন ভাইয়াদের কাছে মিছিলে না যেতে পারার জন্য ক্ষমা চাওয়ার পরও তাঁরা ক্ষমা করেননি। প্রথম বর্ষের শতাধিক শিক্ষার্থীর সামনে আমাদের তিনজনকে কান ধরে উঠবস করিয়েছেন তাঁরা। লজ্জায় আমরা কলেজে না আসার কথা ভেবেছি।
অভিযোগের বিষয়ে শিপন আহমেদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি কলেজে ছয় বছর ধরে ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছি। এখানে র্যাগিং হয় না। ছাত্রলীগের ছেলেরা নিয়মিত পড়ালেখা করে, আড্ডা দেয় না।
ছয় বছর ধরে কীভাবে ছাত্রলীগের সভাপতি আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। রাজনীতি করার কারণে পড়ালেখায় অনেক গ্যাপ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
বড়াইগ্রাম সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বাদশা উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, আমি কলেজের কাজে ঢাকায় ছিলাম। আজ ফিরছি, বাসে আছি। পরে কথা বলব।