করোনাভাইরাস এবং বিশেষ করে ইউক্রেন- রাশিয়ার যুদ্ধ তার ওপর স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশনের ফলে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি ও নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। এর প্রভাবে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ও লোডশেডিংয়ে দেশের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক দিকে দ্রব্যমূল্য মূল্যস্ফীতি আর অপরদিকে এখন বিদ্যুৎ নেই- এই দুটো কষ্ট আমার দেশের মানুষ পাচ্ছে। আর একবার যদি বিদ্যুতের পাঙ্খায় বাতাস খাওয়ার অভ্যাস হয়ে যায় তারপরে না পেলে তো আরও কষ্ট হয়ে যায়। এটাও তো বাস্তব কথা।
রোববার (৪ জুন) সকাল ১০টার দিকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ঢাকা-চিলাহাটি রুটে নতুন যাত্রীবাহী ট্রেন চিলাহাটি এক্সপ্রেসের উদ্বোধনকালে সরকারপ্রধান এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস এবং বিশেষ করে ইউক্রেন- রাশিয়ার যুদ্ধ তার ওপর স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশন। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রত্যেকটা পণ্যের মূল্য বেড়ে গেছে। জ্বালানির মূল্য বেড়েছে, গ্যাসের মূল্য বেড়েছে, খাদ্য পণ্যের মূল্য বেড়েছে, যা কিছু আমরা কিনি সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। পরিবহন বেড়ে গেছে, সঞ্চালন বেড়ে গেছে। এমনকি বিদেশে থেকে যে আমরা ঋণ নিয়েছি তারা সুদের হারও বাড়িয়ে দিয়েছি। যার ফলে আমাদের অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে। সেটা মোকাবিলার করার জন্য আমাদের নিজেদেরও কিছু উদ্যোগ আছে।
আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দেবো উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, আমরা প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছিলাম। আজকে সারা বিশ্বব্যাপী গ্যাস, তেল, কয়লা সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়াতে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। কারণ এখন টাকা দিয়েও জ্বালানি কেনা যাচ্ছে না। যার জন্য আমি জানি এই গরমে মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে আমরা বিদ্যুৎ দিয়েছি, সেখানে এয়ার কন্ডিশন (এসি) রুমে বসে, আমি এতোগুলো বেসরকারি টেলিভিশন খুলে দিয়েছি, সেখানে বসে টকশো করছেন। এবং আমরা যা কাজ করি সেখানেই একটা সমালোচনা, সেখানেই একটা কিন্তু খুঁজে নেওয়া, আর মানুষকে হতাশ করার কথাগুলো বলে বেরানো। আর বাংলাদেশের বদনাম বিদেশিদের কাছে বলে বলে নিজেরা সেখান থেকে কি পায় আমি জানি না। কিছু হাদিয়া টাদিয়া জোগাড় করে কিনা, তাও বলতে পারবো না। কিন্তু বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কথা বলেই তারা যেনো তৃপ্তি পায়।
সরকার প্রধান বলেন, বাজেট দেওয়ার পরই যারা প্রতিবারই বলেন এটা সম্ভব না। আমরা কিন্তু সেটা করি এবং করে দেখায়। যারা এসব কথা প্রতিবছরই বলেন তাদেরকে বলবো আপনি আগের বছর কি বলেছিলেন আর আজকের বাংলাদেশ কোথায় এসেছে একটু হিসেবে করে তা যেনো দেখে।
আজকে আমরা বাংলাদেশে বাজেট দিয়েছি। আমরা জানি ২০০৬ সালে বিএনপি সরকারের আমলের যে শেষ বাজেট, সে বাজেট ছিল মাত্র ৬১ হাজার কোটি টাকা। আর ১ জুন আমরা যে বাজেট দিয়েছি সেটা হলো ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশের ইতিহাসে সব থেকে বড় বাজেট আমরা দিয়েছি। এবং এই বাজেট আমরা বাস্তবায়ন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এবং আমরা তা পারবো। আওয়ামী লীগ পারবে। আমি জানি অনেকে অনেক কথাই বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু আমরা বাংলাদেশটাকে চিনি এবং জানি। আর এ বাংলাদেশের মানুষের অবস্থানটাও আমাদের জানা।