সাবেক মন্ত্রী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে সরাইল থানায় আরেকটি হত্যা মামলা হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকেলে থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়। মামলার এজাহারে ৭২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ জনকে।
মামলার বাদী হয়েছেন সরাইল উপজেলা সদরের কুট্টাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. শফি আলী। এ নিয়ে মোকতাদির চৌধুরীর বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ১০টি মামলা হলো, এর মধ্যে ৭টি হত্যা মামলা।
গত ৩১ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে পুলিশ মোকতাদির চৌধুরীকে গ্রেফতার করে। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। তাঁর শাস্তির দাবিতে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মী, মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ মার্চ থেকে পরবর্তী কয়েক দিন আন্দোলন করেছিল হেফাজতে ইসলাম। ২৮ মার্চ দেশব্যাপী মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও তৌহিদি জনতার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছিল। ওই দিন সরাইল বিশ্বরোড মোড় এলাকায় হরতালে অংশ নিয়েছিলেন মামলার বাদীর ছেলে হাফেজ আল-আমীন (১৭)। সেখানে ১ নম্বর আসামির (মোকতাদির চৌধুরী) নির্দেশে কয়েকজন আসামি আল আমীনকে প্রথমে মারধর করেন, পরে গুলি করে হত্যা করেন
মামলায় দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল হোসেনকে আর তৃতীয় আসামি করা হয়েছে সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি লোকমান হোসেনকে। আসামির তালিকায় থাকা ৭২ জনের মধ্যে ৩৮ জন সরাইল উপজেলা বাসিন্দা। বাকি ৩৪ জন জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। সরাইল উপজেলার বাসিন্দাদের অধিকাংশই প্রত্যন্ত গ্রামের। তাঁদের অনেকেই আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মী বা সমর্থক।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মামলার বাদী মো. শফি আলী আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব আসামিকে আমি চিনি না।’
২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ মার্চের ঘটনায় সরাইল থানায় গত ৩ সেপ্টেম্বর আরও একটি হত্যা মামলা হয়। ওই মামলায়ও প্রধান আসামি করা হয়েছে মোকতাদির চৌধুরীকে। ওই মামলায় ৬৭ জনের নাম উল্লেখ আছে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, ৭২ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। মামলায় নিরপরাধ কোনো ব্যক্তি আসামি হয়ে থাকলে তাঁকে অযথা হয়রানি করা হবে না।