বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতি ‘শ্রদ্ধা’ জানিয়ে বক্তব্য দেয়ার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহকে সব ধরনের প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত অবৈধ ও বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।
এ রায়ের ফলে তিনি সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে শিক্ষকের রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. আহসানুল করিম ও অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন।
এর আগে গতবছরের ২০ এপ্রিলের সিন্ডিকেট সভায় ঢাবির প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে রুল জারি হয় গতবছরের ৮ জুন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে আজ এ রায় দিয়েছেন আদালত।
অধ্যাপক রহমত উল্লাহ ঢাবিতে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। নীল দলের প্যানেল থেকে তিনি শিক্ষক সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।
গতবছরের ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাবি প্রশাসন। সেখানে অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে খন্দকার মোশতাকের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানানোর পর খন্দকার মোশতাকের প্রতি ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেও বক্তব্য রাখেন তিনি।
পরে আলোচনা শেষে সভাপতির বক্তব্য দেয়ার সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শিক্ষক সমিতির সভাপতির বক্তব্যের বিতর্কিত অংশ এক্সপাঞ্জ করেন।
অন্যদিকে, নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ। তিনি খন্দকার মোশতাকের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোয় ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন, তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো ছিল অনিচ্ছাকৃত ভুল।
এরপর ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের এক আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য দেওয়ায় গত ২০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহকে সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে সে সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তিনি হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন আদালত।