মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ - দৈনিকশিক্ষা

মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: বিশিষ্ট সাংবাদিক ও মুক্তচিন্তার অধিকারী মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন এর মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দের ২০ নভেম্বর চাঁদপুর জেলার পাইকারদী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার তেমন কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিলো না। কিন্তু ব্যক্তিগত পড়াশোনা ও জ্ঞানী-গুণীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তিনি বিশ শতকের প্রথম দিকে মুসলিম সমাজের একজন বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক ও বুদ্ধিজীবী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।

প্রথম জীবনে তিনি একটি ইনস্যুরেন্স কোম্পানির এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন। কিন্তু শীঘ্রই তিনি বিমা কোম্পানির কাজ ছেড়ে নতুন পেশার সন্ধানে কলকাতা যান। সেখানে তিনি সাংবাদিকতা পেশা বেছে নেন। ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২ ডিসেম্বর তিনি ‘সওগাত’ নামে একটি সচিত্র সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করেন। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে সাময়িকীটির প্রকাশনা স্থগিত রাখা হয়। ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে অবশ্য এর প্রকাশনা পুনরায় শুরু হয় এবং তখন থেকে ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তা অব্যাহতভাবে চলতে থাকে। ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সওগাত সাহিত্য মজলিস প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর মাধ্যমে তরুণ লেখকদের উৎসাহিত করেন। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, বেগম রোকেয়া, শামসুন্নাহার মাহমুদ, সুফিয়া কামাল এবং আরো অনেকে সওগাতকে তাদের প্রগতিশীল ও ভিন্ন মত প্রকাশের প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করেন।

গোঁড়া মুসলিমদের ব্যাপক প্রতিবাদ সত্ত্বেও মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন লেখক, সাহিত্যিক, ইতিহাসবিদ ও শিক্ষিত মুসলিম নারীদের ছবি সওগাতে ছাপান। কার্টুনের মাধ্যমে ব্যাঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে সমাজের অব্যবস্থাকে তিনি তীব্রভাবে তুলে ধরেন। তখনকার দিনে মুসলিম নারীর ছবি ছাপানোটা ছিলো এক অসাধারণ ঘটনা।

১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতায় ‘সওগাত কালার প্রিন্টিং প্রেস’ প্রতিষ্ঠা করেন। মুসলমানদের মধ্যে নতুন উদ্যম ও উদ্দীপনা সৃষ্টি এবং মুসলিম সমাজ সংস্কারের ক্ষেত্রে সওগাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নারী স্বাধীনতার পক্ষে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে নাসিরুদ্দীন ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে ‘বেগম’ নামে একটি সচিত্র সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। দেশবিভাগের পর নাসিরউদ্দীন পূর্ব বাংলায় চলে আসেন এবং ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে সওগাত পত্রিকা আবারো নিয়মিত প্রকাশিত হতে থাকে।

মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন ছিলেন বাংলা একাডেমির ফেলো, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ‘বোর্ড অব ট্রাস্টি’-র সদস্য এবং ‘নজরুল ইন্সটিটিউট’-এর বোর্ড অব ট্রাস্টি-র চেয়ারম্যান। তিনি ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা একাডেমির সম্মাননা পুরস্কার, ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে  একুশে পদক এবং  স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার প্রাপ্ত হন। ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে সৃজনশীল লেখক ও সাংবাদিকদের পুরস্কৃত করার লক্ষ্যে তিনি নিজ নামে নাসিরউদ্দীন স্বর্ণ পদক প্রদান শুরু করেন। মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049729347229004