বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোটবগী গ্রামের নজরুল ইসলাম ডাকুয়া যাচ্ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। সেই উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে রওনা দিয়েছিলেন তিনি। তবে গতকাল বুধবার হংকং বিমানবন্দরে যখন ফ্লাইট অবতরণ করে, তখন মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় তাঁকে।
নজরুল পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ডিগ্রি কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। তাঁর ভাই তোফাজ্জেল হোসেন ডাকুয়া ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে গ্রিনকার্ড-সুবিধা পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাড়ি জমান। এর পাঁচ বছরের মাথায় তিনি তাঁর মা ফাতেমা বেগমকে নিয়ে যান যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর তিনি তাঁর তিন ভাইকে সেখানে নেন। চলতি বছরের জুলাইয়ে আরেক ভাই নজরুল ইসলাম ডাকুয়া, তাঁর স্ত্রী লায়লা আক্তার (৪০), ছেলে জিহাদুল ইসলাম ইহান (৯) ও মেয়ে নওরিন ইসলাম ইভার (১৮) ভিসা হয়। গত সোমবার নজরুল ইসলাম ডাকুয়া একা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে বরগুনা ত্যাগ করেন। গত মঙ্গলবার রাত সোয়া ২টার দিকে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। পথে হংকংয়ে ট্রানজিট ছিল তাঁর। তাঁকে বহনকারী উড়োজাহাজটি গতকাল সকালে হংকং বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ওই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ লক্ষ করে তিনি নামছেন না। বিমান কর্তৃপক্ষ তাঁকে সিটে অচেতন অবস্থায় দেখতে পায়। পরে তারা তাঁকে উদ্ধার করে একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে মৃত ঘোষণা করে। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নজরুল ইসলাম ডাকুয়ার মরদেহ হংকংয়ের একটি হাসপাতালে রয়েছে।
গতকাল বিকেলে নজরুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, স্বজনেরা আহাজারি করছেন। স্ত্রী লায়লা আক্তার বলেন, ‘আল্লাহর নেওয়ার ইচ্ছাই যখন ছিল, এভাবে নিল কেন? বাড়িতে বসে নিয়ে যেত।’
নজরুলের যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বড় ভাই তোফাজ্জেল হোসেন ডাকুয়া বলেন, ‘আমার ভাই বিমানে মারা গেছেন। কীভাবে মারা গেছেন তা আমি এখনো নিশ্চিত না। তবে বিমান কর্তৃপক্ষ অবহিত করেছে, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গেছেন।’