ঠাকুরগাঁওয়ে যুবলীগ নেতাকে থানায় নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে সদর থানার ওসি কামাল হোসেনসহ চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগী জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান পুলক বাদী হয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এই মামলা দায়ের করেন।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদ বাদী পুলকের কাছ থেকে পুলিশের দ্বারা অমানবিক নির্যাতনের বিস্তারিত বর্ণনা শুনেছেন এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নির্যাতন ও চিকিৎসার তথ্য প্রমাণাদি আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সাথে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেনকে একটি মোকদ্দমা রুজু করার নির্দেশ দিয়ে ঘটনার বিচার বিভাগীয় নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য জেলায় কর্মরত একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) খোকা চন্দ্র রায়, মো. মোতালেব, মো. হাফিজ ও অপারেশন ইনচার্জ মো. লতিফ।
আদালতে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, গত ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও সাধারণ পাঠাগার চত্বরে অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলায় দর্শনার্থী হিসেবে যান জেলা যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক খালিদ সিরাজ রকি। এ সময় ওসি মো. কামাল হোসেন, এএসআই খোকা চন্দ্র রায়, মো. মোতালেব, মো. হাফিজ ও অপারেশন ইনচার্জ মো. লতিফ অন্যায়ভাবে তাকে আটক করে মারধর করতে থাকেন। পরে আসাদুজ্জামান পুলক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জানতে চাইলে ওসি মো. কামাল হোসেনসহ অন্য আসামিরা তাকে মারধর করে পুলিশের পিকআপে তুলে থানায় নিয়ে যান। এ সময় ওসি আসাদুজ্জামান পুলকের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন, অন্যথায় তাকে ক্রসফায়ারে দেবেন বলে হুমকি দেন। তাদের দাবীকৃত টাকা না দিতে পারায় আসাদুজ্জামান পুলককে থানা হেফাজতে রেখে ওসিসহ অন্য আসামিরা নির্মমভাবে মারধর করতে থাকেন। নির্যাতনের এক পর্যায়ে ওসির লাঠির আঘাতে আসাদুজ্জামান পুলকের বাঁ হাতের হাড় ভেঙে যায়।
পরে গত ৩০ এপ্রিল আসাদুজ্জামান পুলককে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর গত ২ মে আদালতের মাধ্যমে জামিনে বের হয়ে আসাদুজ্জামান পুলক হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। আট দিন ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ আদালতে মামলাটির আবেদন করেন যুবলীগের এই নেতা।