যেভাবে সংশোধন করবেন এনআইডি কার্ডের ভুল - দৈনিকশিক্ষা

যেভাবে সংশোধন করবেন এনআইডি কার্ডের ভুল

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে ন্যাশনাল আইডেনটিটি কার্ড (এনআইডি) বা জাতীয় পরিচয়পত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট। দেশে প্রতিটি নাগরিকদের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহ শুরু হয় ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে। এরপর ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ২ অক্টোবর থেকে চালু হয় ইলেকট্রনিক চিপযুক্ত স্মার্ট আইডি কার্ড। তারপর ২০২০ থেকে শুরু হয় অনলাইন সেবাও। 

নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে প্রায় ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জনের হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। কিন্তু প্রায়ই কার্ডে নানা ভুলের অভিযোগ পাওয়া যায়। যেমন ভুলের জন্য বাবার বয়স ছেলের চেয়ে দশ বছর কম হয়ে গেছে, মায়ের নামের জায়গায় বসে গেছে বাবার নাম। কিন্তু তথ্যে একবার ভুল হয়ে গেলে অনেক রকম সমস্যায় পড়তে হয়।

অনেক সময় বাড়ির ঠিকানা বদল, বৈবাহিক অবস্থার পরিবর্তন ইত্যাদি নানা কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের দরকার পড়তে পারে। তাই চলুন, জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধন নিয়ে বিস্তারিত জেনে নিই।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন পদ্ধতি

স্মার্ট আইডি কার্ডের/ ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন সেবাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি সেবা হলো জাতীয় পরিচয়পত্র বা এর তথ্য-উপাত্ত সংশোধন। এনআইডি পোর্টাল থেকে খুব সহজেই এই সেবাটি পাওয়া যেতে পারে—

• এনআইডি নম্বর দিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করা;

• স্মার্ট আইডি কার্ড সংশোধন ফি জমা দেয়া;

• প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোডের মাধ্যমে তথ্যগুলো আপডেট করা।

জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদনের নির্ধারিত কার্যদিবস পর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ফি পরিশোধের সময় যে মোবাইল নম্বর দেয়া হয়েছিল তাতে সংশোধন অনুমোদনের বার্তা আসবে। সেই সঙ্গে সংশোধিত এনআইডি কার্ডটিও ওয়েবসাইটে দেখা যাবে। পরে সেটি ডাউনলোড ব্যবহার করা যাবে। তবে ইলেক্ট্রনিক চিপযুক্ত সংশোধিত এনআইডি পেতে হলে প্রার্থীকে তার ভোটার অঞ্চল থেকে সরাসরি সংগ্রহ করতে হবে।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি সাধারণত দুটি ক্ষেত্রে দিতে হয়—

• স্মার্ট কার্ডের সামনে ও পেছনের পৃষ্ঠায় কিছু তথ্য লেখা থাকে। যেগুলো নিবন্ধনের সময় নাগরিকরা ফরম-২ এর মাধ্যমে প্রদান করে থাকেন। এগুলোর মধ্যে সামনের পৃষ্ঠায় বাংলা ও ইংরেজিতে জাতীয় পরিচয়পত্রধারীর নাম, বাংলায় পিতা ও মাতার নাম, ইংরেজিতে জন্ম তারিখ ও এনআইডি নাম্বার, স্বাক্ষর এবং পেছনে বাংলায় ঠিকানা, ইংরেজিতে রক্তের গ্রুপ ও জন্মস্থান অন্তর্ভুক্ত।

এগুলোর মধ্যে যে কোনো তথ্য পরিবর্তন করতে হলে প্রথমবার আবেদনের সময় ২৩০ টাকা, দ্বিতীয়বার ৩৪৫ টাকা এবং তারপর থেকে প্রতিবার আবেদনের জন্য ৫৭৫ টাকা জমা দিতে হবে।

• নিবন্ধনের সময় নাগরিকরা সেই ফরম-২ এর মাধ্যমে কিছু তথ্য প্রদান করেন, যেগুলো এনআইডি কার্ডে প্রদর্শন করা থাকে না। যেমন : প্রার্থীর পেশা, পাসপোর্ট ও মোবাইল নম্বর, শিক্ষাগত যোগ্যতা ইত্যাদি। এগুলোর সংশোধন ফি ১১৫ টাকা।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি বিকাশ, রকেট, ওকে ওয়ালেট ও টি ক্যাশ-এর মাধ্যমে পরিশোধ করা যায়।

জাতীয় পরিচয়পত্রের নির্ধারিত ফি পরিশোধের ৩০ মিনিট পর থেকে তথ্য সম্পাদন শুরু করা যাবে। আর সংশোধিত স্মার্ট আইডি কার্ড হাতে পেতে সর্বোচ্চ দুই মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ফি পরিশোধের পরপরই আসবে তথ্য সম্পাদনের স্ক্রিন। এ অংশে তথ্য জমা দেয়ার পাশাপাশি তথ্যের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র আপলোড করতে হয়।

ব্যক্তির নাম অথবা জন্ম তারিখ সংশোধন করতে হলে প্রার্থীর যে কাগজগুলো সংযুক্ত করতে হয় সেগুলো হলো—

• জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র। # কমপক্ষে মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষার সনদপত্র থাকতে হবে (শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক বা সমমানের নিচে হলে এবং প্রার্থী সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত অথবা সংবিধিবদ্ধ কোনো সংস্থায় কর্মরত হলে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চাকরির বই বা মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার (এমপিও) বা ড্রাইভিং লাইসেন্স বা পাসপোর্ট বা ট্রেড লাইসেন্স লাগবে)।

• বিবাহিতদের ক্ষেত্রে স্বামী বা স্ত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র এবং কাবিননামার সত্যায়িত কপি লাগবে (বিয়েসংক্রান্ত কোনো কারণে নারীদের নামের পরিবর্তন করতে হলে সে ক্ষেত্রে কাবিননামা বা তালাকনামা বা স্বামীর মৃত্যু সনদ, ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কর্তৃক হলফনামা বা বিয়েবিচ্ছেদ ফরমানের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে)।

• ধর্ম পরিবর্তন অথবা অন্য কোনো কারণে পুরো নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট কর্তৃক হলফনামা, জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির কপি, ওয়ারিশ সনদপত্র, ইউনিয়ন বা পৌর বা সিটি করপোরেশন থেকে ব্যক্তির নামসংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র বা চাকরির বই বা এমপিও অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স জমা দিতে হবে।

• এ ছাড়া পিতা বা মাতার নাম সংশোধনের সময়, যদি পিতা বা মাতার নাম উল্লেখ থাকে তবে প্রার্থীর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের সনদপত্র, প্রার্থীর পিতা, মাতা, ভাই ও বোনের এনআইডির সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।

• পিতা বা মাতার নামের পূর্বে ‘মৃত’সংযোজন করতে হলে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পিতা বা মাতার মৃত্যু সনদের সত্যায়িত কপি, জীবিত থাকলে সেই সূত্রে সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি (ইউনিয়ন পরিষদ)-এর চেয়ারম্যান বা পৌর মেয়র বা ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র, পিতা বা মাতার এনআইডি কার্ডের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।

• ঠিকানা সংশোধনের জন্য বাড়ির দলিল বা গ্যাস, টেলিফোন বা বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র, পানির বিল জমা দিতে হবে।

• রক্তের গ্রুপ সংশোধনের জন্য প্রয়োজন হবে ডাক্তারি সনদপত্র।

• ব্যক্তির সবশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।

প্রয়োজনীয় এসব ডকুমেন্টস যারা সত্যায়িত করতে পারবেন—সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, গেজেটেড সরকারি কর্মকর্তা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033919811248779