যে দেশকে গিলে খাচ্ছে সমুদ্র - দৈনিকশিক্ষা

যে দেশকে গিলে খাচ্ছে সমুদ্র

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তাল ঢেউ রোজ একটু একটু করে গিলে নিচ্ছে দ্বীপপুঞ্জ। অস্তিত্বসঙ্কটের মুখে পড়েছে ওশিয়ানিয়া মহাদেশের অন্তর্গত স্বতন্ত্র দ্বীপরাষ্ট্র টুভালু।

পশ্চিম-মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরে হাওয়াই এবং অস্ট্রেলিয়ার মাঝে টুভালুকে আকারে ক্ষুদ্রই বলা চলে। তবে এটি বিশ্বের অন্যতম সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র। একসময় বহু মানুষ এই দ্বীপে ঘুরতে আসতেন।

টুভালু পর্যটকদের মধ্যে এক সময় জনপ্রিয় ছিলো। তবে অতীতের প্রতিপত্তি এখন প্রায় নেই বললেই চলে। উল্টে এখন তার কপালে জুটেছে ক্লেশদীর্ণ দেশের শিরোপা।
বিশ্বের সবচেয়ে কম মানুষের পা পড়েছে, এমন দেশ হিসাবে এখন টুভালুর পরিচয়। অনেকে এই দ্বীপের নামই জানেন না। যাঁরা জানেন, তাঁরাও ভুলতে বসেছেন। কেউ এই দ্বীপে যাওয়ার কথা ভাবেনই না।

বর্তমানে টুভালুতে মেরেকেটে ১২ হাজার মানুষের বাস। যাঁরা অস্তিত্বসঙ্কটে ভুগছেন। দ্বীপে বিদেশিদের আগমন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। দ্বীপটিই গায়েব হয়ে যেতে বসেছে।
প্রশান্ত মহাসাগরের উপর একটি আংটি আকৃতির প্রবালপ্রাচীরে টুভালুর অবস্থান। মাঝে একটি উপসাগর রয়েছে। তাকে ঘিরে জেগে উঠেছে একের পর এক দ্বীপ।

অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সাজানো টুভালু। নীল জলরাশির ধার ঘেঁষে সেখানে জনবসতি গড়ে উঠেছে। জলের পাশ দিয়েই চলে সাইকেল, মোটরসাইকেল এবং ছোট কিছু গাড়ি।

সমুদ্রের ধারে গজিয়ে ওঠা মাছ ভাজার দোকান, রাতের সৈকতে ক্যাম্পফায়ার, সারি সারি নারিকেল গাছ টুভালুর অন্যতম আকর্ষণ। স্বচ্ছ নীল জল ভেদ করে স্পষ্ট দেখা যায় তীরের বালি।

প্রকৃতির পাশাপাশি টুভালুর পরিবেশ, আবহাওয়াও মনোরম। দ্বীপের গড় তাপমাত্রা ২৭ থেকে ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সারা বছরই নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া থাকে সেখানে।

টুভালুতে একটি মাত্র বিমানবন্দর রয়েছে। তার নাম ফুনাফুটি। ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন আমেরিকার নৌবাহিনী টুভালুতে এই বিমানবন্দর তৈরি করেছিল। তখন থেকেই জারি বিমান চলাচল।

এই বিমানবন্দরই সমুদ্রের মাঝে ক্ষুদ্র দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গে গোটা বিশ্বের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। একসময় এখানে অনেক বিমান ওঠানামা করতো। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি ভিন্ন।

বর্তমানে ফুনাফুটি বিমানবন্দরে একটি মাত্র বিমান সংস্থা একটি মাত্র বিমান চালায়। ফিজি এয়ারওয়েসের একটি বিমান নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী টুভালুতে নামে।
সপ্তাহে তিন বার ফিজির রাজধানী সুভা থেকে টুভালুতে যাতায়াত করে ফিজি এয়ারওয়েজের এটিআর ৭২-৬০০ বিমানটি। মাত্র ৭২ জন যাত্রী বহনের ক্ষমতা রয়েছে বিমানটির।

টুভালুর নিজস্ব মুদ্রা রয়েছে। সেখানকার সরকার সম্প্রতি ঘোষণা করেছে, আগামী অক্টোবর মাস থেকে দেশের অভ্যন্তরেও বিমান চলাচল শুরু হবে।

কিন্তু, সমুদ্রের দাপটে টুভালুর দ্বীপগুলি একে একে পানির নীচে তলিয়ে যাচ্ছে। ক্রমে বাড়ছে প্রশান্ত মহাসাগরের জলস্তর। চারদিকে ঢেউয়ের মাঝে ধুঁকছে এই দ্বীপপুঞ্জ।
দ্বীপের বাসিন্দারা জানান, তাঁদের আতঙ্কের প্রহর শুরু হয় ঝড় উঠলে। প্রবল বাতাসে সমুদ্রের ঢেউ উথালপাথাল করে ওঠে। পূর্ব, পশ্চিম সব দিক থেকেই ধেয়ে আসে উত্তল ঢেউ। 

টুভালুতে মোট ন’টি দ্বীপ রয়েছে। তার মধ্যে দু’টি দ্বীপ ইতোমধ্যেই ডুবতে বসেছে। ঢেউয়ের ধাক্কায় প্রায়ই সেখানে সমুদ্রের পাড় ভাঙে। ফলে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে দ্বীপের আয়তন।

প্রবালপ্রাচীরের এই দ্বীপপুঞ্জে যেটুকু অংশ মানুষের বসবাসযোগ্য, সে অঞ্চল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র দুই মিটার উঁচু। যে হারে প্রতি বছর সমুদ্রের জলস্তর বাড়ছে, তাতে কত দিন সেই অংশ উপরে থাকবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর ৩ দশমিক ৯ শতাংশ হারে সমুদ্রের পানি বাড়ছে। ঢেউয়ের উচ্চতাও আগের চেয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে টুভালু সম্পূর্ণ রূপে জলের নীচে চলে যেতে পারে।

সূত্র: আনন্দবাজার 

 

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত - dainik shiksha প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি - dainik shiksha আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির - dainik shiksha আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি - dainik shiksha পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান - dainik shiksha ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল - dainik shiksha বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0065310001373291