যৌন হেনস্তা : ভারতীয় অধ্যাপকের বিরুদ্ধে আইনের দারস্ত বাংলাদেশি ছাত্রী - দৈনিকশিক্ষা

যৌন হেনস্তা : ভারতীয় অধ্যাপকের বিরুদ্ধে আইনের দারস্ত বাংলাদেশি ছাত্রী

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

স্ত্রী সন্তানকে ছেড়ে নিজের চেয়ে ৩০ বছরের ছোট ছাত্রী জুলির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন ৫০ বছর বয়সী অধ্যাপক মটুক নাথ। ১০ বছর আগের সেই প্রেমের সম্পর্কে নেমে এসেছিল নানা সামাজিক ও প্রশাসনিক বাধা। ভারতের বিহারে মাসের পর মাস খবরের শিরোনামে থাকা সে প্রেমের গল্প আজও লোকের মুখে মুখে ঘোরে। সম্প্রতি সেই জুলি-মটুক নাথ স্ক্রিপ্টের আবারও পুনরাবৃত্তি হয়েছে, তবে বিহারের বদলে এবার পশ্চিমবঙ্গে ঘটেছে এমন ঘটনা। প্রেমের পরিণতিও হয়েছে কিছুটা ভিন্ন। দীর্ঘদিনের প্রেম, সহবাস ও পরে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানানোয় যৌন হেনস্তার অভিযোগে ভারতীয় এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে আইনের দারস্ত হয়েছেন ভারতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি এক ছাত্রী। ছাত্রীকে আইনি সহায়তা দিতে হস্তক্ষেপ করেছে কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাস। একইসঙ্গে বিদেশি নারীকে যৌন হেনস্তা কাণ্ডে সরব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য মহিলা কমিশনও।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে- বাংলাদেশের রংপুর জেলার ওই ছাত্রী পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পিজি (পোস্ট গ্রাজুয়েট) প্রথম বর্ষের ছাত্রী। সম্প্রতি তিনি বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আজাজুল আলী খানের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কয়েক মাস ধরে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার অভিযোগ আনেন। ছাত্রীর অভিযোগ- তার শিক্ষক আজাজুলকে বিয়ের কথা বললেই তিনি তার কাছ থেকে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেন। এমনকি তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগও বন্ধ করে দেন। এমন অবস্থায় ওই শিক্ষকের রিরুদ্ধে বাংলাদেশি ওই ছাত্রী বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল কমপ্লেন কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও অনেক আধিকারিককে অভিযোগের কপি দিয়ে বিচার চেয়ে আবেদন করেন ওই শিক্ষার্থী। ছাত্রীটির আরও অভিযোগ- অভিযুক্ত অধ্যাপকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে এরপর পুলিশের সহায়তা নেন তিনি।

অভিযোগের প্রাথমিক পর্যায়ে পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা মেলেনি ওই ছাত্রীর। অভিযুক্ত অধ্যাপককে জামিনযোগ্য ধারায় আটক করে পুলিশ। ফলে আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জামিনে মুক্ত হয়ে যান ওই অধ্যাপক। এরপর থেকেই শুরু হয় হুমকি। ছাত্রীটির অভিযোগ- ১৫ দিন ধরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি। এরপর বাধ্য হয়ে আইনি সহায়তা চেয়ে দারস্ত হন বাংলাদেশ উপদূতাবাসের। ১৯ এপ্রিল দূতাবাসের হস্তক্ষেপে নড়েচড়ে বসে দুর্গাপুর মহিলা থানার পুলিশ। দূতাবাসের শিক্ষা সচিব রিয়াজুল ইসলাম ভুক্তভোগী ছাত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে কথা বলেন। এরপরে গোটা ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়। 

নতুন করে অভিযোগ দায়ের করা হয় দুর্গাপুর মহিলা থানায়। নতুন অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয় এবং এরপরেই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও রেকর্ড করা হয়। ঘটনা প্রকাশ্যে চলে এলে বিদেশি নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হেনস্তা কাণ্ডে সরব হয়ে উঠে রাজ্য মহিলা কমিশন। শনিবার ওই ঘটনায় ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলতে দুর্গাপুরে যান রাজ্য মহিলা কমিশনের দুই প্রতিনিধি ডা দীপান্বিতা হাজারি এবং দেবযানী চক্রবর্তী। ভুক্তভোগী বাংলাদেশি এই ছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন তারা। তাদের দাবি ওই ছাত্রী সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার হেনস্তার শিকার হয়েছেন। যৌন হেনস্তার জেরে এখনও ট্রমার মধ্যে আছেন ওই ছাত্রী। গোটা ঘটনায় অভিযুক্তের বিচার চেয়ে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে মহিলা কমিশন। পাল্টা নিজেদের তদন্ত রিপোর্ট খুব দ্রুতই প্রকাশ করবেন বলে জানিয়েছে তারা। 

ওই ছাত্রী অভিযোগ করেছেন- সর্বশেষ বুধবার সকালে তিনি খাবার কিনতে বাজারে যাওয়ার সময় দুই বাইক আরোহী তাকে ধাক্কা মারে। তিনি পড়ে গেলে তার ব্যাগ ছিনতাই এবং মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে তাতে থাকা সব কল রেকর্ড, এসএমএস ও ছবির ভিডিও মুছে ফেলার চেষ্টা করে বাইক আরোহী অজ্ঞাত দুই যুবক। এমন ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি। 

এ প্রসঙ্গে কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাধন চক্রবর্তী জানান, নির্যাতিতার পুরো পরিবার বাংলাদেশে থাকে। তিনি আসানসোলের ত্রিবেণী দেবী ভালোটিয়া কলেজের প্রাক্তন ছাত্রী। পরীক্ষায় ভালো করার পর কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এখানেই বাংলার অধ্যাপকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয়। পরে জানা যায়, ওই শিক্ষকের সঙ্গে অন্য কারও সম্পর্ক ছিল। এরপর থেকেই দুজনের মধ্যে কলহ শুরু হয়। ঘটনার তদন্ত আগে থেকেই চলছিল। ভুক্তভোগী ছাত্রী এর আগে ৬ এপ্রিল অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত চলছিল। এরই মধ্যেই এত ঘটনা ঘটেছে। 

উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাসও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আমরা যতদূর সম্ভব তদন্তে সহযোগিতা করব।

অবশেষে বাজারে আসছে একাদশ শ্রেণির পাঁচ আবশ্যিক বই - dainik shiksha অবশেষে বাজারে আসছে একাদশ শ্রেণির পাঁচ আবশ্যিক বই অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে রেলগেট অবরোধ তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে রেলগেট অবরোধ তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের আওয়ামী আমলে শত কোটি টাকা লুট শিক্ষা প্রকৌশলের চট্টগ্রাম দপ্তরে - dainik shiksha আওয়ামী আমলে শত কোটি টাকা লুট শিক্ষা প্রকৌশলের চট্টগ্রাম দপ্তরে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটির তালিকা - dainik shiksha শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটির তালিকা ছাত্ররা রাজনৈতিক দল ঘোষণা করবে কি না জনগণ নির্ধারণ করবে - dainik shiksha ছাত্ররা রাজনৈতিক দল ঘোষণা করবে কি না জনগণ নির্ধারণ করবে কুয়েটে ভর্তি আবেদন শুরু ৪ ডিসেম্বর, পরীক্ষা ১১ জানুয়ারি - dainik shiksha কুয়েটে ভর্তি আবেদন শুরু ৪ ডিসেম্বর, পরীক্ষা ১১ জানুয়ারি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033359527587891