দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি: যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটে (আইবিএ) প্রভাষক পদে নিয়োগ পেতে যাওয়া এক শিক্ষকের নিয়োগটি আটকে গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম সাজু সাহা। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন নিজ বিভাগেরই এক সাবেক ছাত্রী।
জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ ইনস্টিটিউটের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম বোর্ড অব গভর্ন্যান্স (বিজি) এই নিয়োগ আটকে দেয়। সোমবার (১ এপ্রিল) উপাচার্যের বাসভবন সংলগ্ন লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত এই বোর্ডের এক সভায় নিয়োগ স্থগিতের এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সভায় সভাপতিত্ব করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারের সভাপতিত্বে হওয়া নিয়োগ বোর্ড সাজু সাহাসহ চারজনকে নিয়োগের জন্য মনোনীত করে। সোমবার অনুষ্ঠিত বিজি বোর্ডে এটি পাস হওয়ার কথা ছিল।
উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেন, নিয়োগ বোর্ড যখন তাকে নিয়োগ দিতে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তখনো ওই অভিযোগটি আসেনি। এরপর অভিযোগ আসলে বোর্ড অব গভর্ন্যান্সের মিটিংয়ে নিয়োগের বিষয়ে আগের সিদ্ধান্ত আপাতত গৃহীত হয়নি বা বিবেচিত হয়নি। এটি রিভিউ করার জন্য পাঠানো হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী সোমবার (১ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, অভিযোগের পক্ষে সব তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। তার (শিক্ষক) যৌন হয়রানির কারণেই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে পারেননি। এ ছাড়াও স্নাতকের শেষ সেমিস্টার থেকেই তিনি হয়রানি শুরু করলে শেষ সেমিস্টারের ফলও ভালো হয়নি।
এর আগে, গত ২৩ মার্চ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও পরীক্ষায় নম্বর কম দেওয়ার অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। পরেরদিন অভিযুক্ত শিক্ষক ছাত্রীর বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এবং সবশেষ গত সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ৫০ লাখ টাকার মানহানির মামলা করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে প্রায় আট বছর আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। এর চার বছর পর পদোন্নতি পেয়ে সহকারী অধ্যাপক হন। গত ৬ বছরে তিন দফায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগে শিক্ষক হওয়ার আবেদন করে একাডেমিক ফলাফলের কারণে ব্যর্থ হন তিনি।