রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দুই মাসে অন্তত ১০ শিক্ষকের বিরুদ্ধে জমা পড়েছে যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ। ক্যাম্পাসজুড়ে দেয়াল লিখন, ব্যঙ্গচিত্র, পোস্টার টানানো হচ্ছে। তাতে আছে, যৌন নিপীড়ন থেকে শুরু করে ধর্মবিশ্বাস বা পোশাক নিয়েও কটূক্তির অভিযোগও। শিক্ষার্থীদের দাবি, দীর্ঘদিন ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি তারা। তবে এর বিপরীতে অনেকেই বলছেন, ব্যক্তি স্বার্থে সামাজিকভাবে হেয় করতেই এসব অভিযোগ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ১০ অভিযোগের পাঁচটি নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত। যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কমিটিতেও অভিযোগ জমা পড়েছে সাতটি। তারা বলছে, অভিযুক্তদেরও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে।
এক শিক্ষার্থী তাঁর এক শিক্ষককে নিয়ে বলেন, ‘উনি সামনে এলেই আমার হাত কাঁপতে থাকে। আমার প্যানিক অ্যাটাক হয়। এটা আমি কখনো ভুলতে পারি না। এটা আমাকে ট্রমায় ফেলেছে।’
অন্য এক শিক্ষার্থীর অভিযোগ করে বলেন, ‘পার্সোনাল আক্রোশে আমাদের ১১ জনের মধ্যে ছয়জনকে মাস্টার্সে ফেল করিয়ে দিয়েছিলেন এক শিক্ষক।’
আরের শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি বাসায় কিছু না জানিয়ে দিনের পর দিন সব সহ্য করেছি। আমি আজকে আর সহ্য করতে পারছি না। আমি চাই ওই শিক্ষকের যেন স্থায়ী বহিষ্কার হয়।’
রাবি যৌন নিপীড়ন নিরোধ বিষয়ক অভিযোগ কমিটির সভাপতি দিল আরা হোসেন বলেন, ‘কোনো শিক্ষার্থী যদি বলেন, তার সঙ্গে এমন কিছু হয়েছে। তাদের কাছে ডকুমেন্টও আছে। সে ক্ষেত্রে আমাদের কনসিডার করতে হবে। কেউ ফোনে অভিযোগ করছেন, আমরা বলছি তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক সরকার বলেন, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমরা লক্ষ্য করছি, ১০ বছর আগের ঘটনা এখন টেনে এনে শিক্ষকদের সামাজিকভাবে হেনস্তা করার প্রচেষ্টা। এগুলো ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও বলছে, পক্ষপাতমুক্ত থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতেই দায়ী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, কারো বিরুদ্ধে যেন অন্যায় জুলুম না হয়। তবে যে অপরাধী তাকে শাস্তি পেতেই হবে। এমন একটা কমিটমেন্ট এই প্রশাসনের আছে।