রাবি ছাত্রলীগ নেতাদের জন্য প্রাধ্যক্ষের বিশেষ বাথরুম - দৈনিকশিক্ষা

রাবি ছাত্রলীগ নেতাদের জন্য প্রাধ্যক্ষের বিশেষ বাথরুম

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ২৮টি বাথরুমের ২৭টি পুরাতন ও জীর্ণ-শীর্ণ হলেও একটি বাথরুমের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রায় দুই লাখ টাকা ব্যয়ে গত বছর টাইলস, বেসিন ও কমোডসহ বেশ কিছু অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে বাথরুমটিতে। বাথরুমটি ব্যবহার করতেন শাখা ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা। স্বপ্রণোদিত হয়ে বাথরুমটি আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেন হলের সাবেক প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শায়খুল ইসলাম মামুন জিয়াদ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি গঠিত হয় ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ২১ অক্টোবর। কমিটি গঠনের পর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু এই হলের ২৩০ নম্বর কক্ষে এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব ২২৮ নম্বর কক্ষে থাকা শুরু করেন। তারা দুজনে হলের ২৩৪ নম্বর বাথরুমটি ব্যবহার করতেন। তাই বাথরুম আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেন তৎকালীন প্রাধ্যক্ষ। বাথরুমটি আধুনিকীকরণ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী বরাবর ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ৫ নভেম্বর একটি আবেদনপত্র পাঠান হলের প্রাধ্যক্ষ।

আবেদনপত্রটিতে বলা হয়েছে, ‘...জরুরি ভিত্তিতে বাথরুমটি আধুনিকীকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি। উল্লেখ্য যে, উক্ত বাথরুমটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগের সভাপতি ও সেক্রেটারী ব্যবহার করে থাকেন।’ এই আবেদনের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর উক্ত বাথরুমটি আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, হল প্রশাসনের আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা বাথরুমটি আধুনিকীকরণের উদ্যোগ নেই। এ কাজে আনুমানিক দুই লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে।

অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, বিষয়টিকে মোটেও ভালোভাবে দেখার সুযোগ নেই। আমাদের শিক্ষার্থীরা হল গুলোতে মানবেতর জীবনযাপন করে। যেখানে অন্যান্য বাথরুম গুলো অবস্থা খারাপ সেই পরিস্থিতিতে দুজন বিশেষ ছাত্রনেতার জন্য জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করে বিশেষ সুযোগ দেওয়া অন্যায় এবং বৈষম্য। কারণ এই টাকাগুলো কারো ব্যক্তিগত না বরং শিক্ষার্থীদের এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের। এ দুর্নীতির সাথে যারা জড়িত তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা উচিত।

সাবেক প্রাধ্যক্ষ শাইখুল ইসলাম মামুন জিয়াদ বলেন, ‘ওরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে এসেছিল। এখানে আমার কিছু করার ছিল না।’

বর্তমান হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জামিরুল ইসলাম বলেন, একজন প্রাধ্যক্ষ এমন ভাষায় আবেদনপত্র লিখতে পারেন না। আমরা এ ধরনের সকল অনিয়ম তদন্ত করে দেখবো এবং উপাচার্য স্যারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, হল প্রাধ্যক্ষদের সকল অনিয়মের নথি আমরা সংগ্রহ করছি। সকল নথি সংগ্রহ শেষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাইখুল ইসলাম মামুন জিয়াদ পদত্যাগ করেন।

পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতার দাবি - dainik shiksha পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতার দাবি শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে - dainik shiksha ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে ‘রাজাকার’ স্লোগানের ব্যাখ্যা দিলেন উপদেষ্টা নাহিদ - dainik shiksha ‘রাজাকার’ স্লোগানের ব্যাখ্যা দিলেন উপদেষ্টা নাহিদ উচ্চশিক্ষায় ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ - dainik shiksha উচ্চশিক্ষায় ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে - dainik shiksha ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0065240859985352