রাশিয়ায় যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে শিশুরাও। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দেশজুড়ে স্কুলের খেলার মাঠগুলো প্যারেড গ্রাউন্ডে পরিণত করা হচ্ছে। পরিখা খননের কাজ থেকে শুরু করে শেখানো গ্রেনেড নিক্ষেপ পদ্ধতি এবং প্রকৃত বন্দুক চালানো। নার্সারি গ্রেডের শিশুরা ইউনিফর্ম পরে মার্চিং (সামরিকদের হাঁটার পদক্ষেপ) অনুশীলনে অংশ নিচ্ছে। কিশোরদের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গঠন করা হয়েছে। মাতৃভূমির প্রতিরক্ষার ওপর জোর দেওয়ার জন্য জাতীয় পাঠ্যক্রমও পরিবর্তন করা হচ্ছে। এক কথায়, রাশিয়ার শিশুরা যুদ্ধের জন্য পুরোদমে প্রস্তুত হচ্ছে।
সম্প্রতি রুশ শিক্ষামন্ত্রী সের্গেই ক্রাভতসভ বলেছেন, রাশিয়ান স্কুল এবং কলেজগুলোতে এখন প্রায় ১০ হাজার তথাকথিত সামরিক-দেশপ্রেমিক ক্লাব রয়েছে। ক্লাবগুলো বহুমুখী প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে পাঠ্যক্রমের আমূল পরিবর্তন ঘটাতে সহায়তা করবে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চলতি বছরের আগস্ট মাসে স্কুলগুলোতে একটি নতুন বাধ্যতামূলক কোর্স চালুর জন্য একটি আইনে স্বাক্ষর করেন। এতে মাতৃভূমির সুরক্ষা এবং প্রতিরক্ষার মৌলিক বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে। সামরিক ইউনিটে ভ্রমণ, সামরিক ক্রীড়া গেমস, সামরিক কর্মীদের সাথে মিটিং এবং ড্রোনবিষয়ক ক্লাসগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হবে। উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রদের অভিজ্ঞ সামরিক ইউনিট অফিসার বা প্রশিক্ষকদের নির্দেশনায় প্রকৃত গোলাবারুদ ব্যবহার করতে শেখানো হবে। কোর্সটি এই বছর পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে চালু করা হবে।
পাঠ্যপুস্তকে যোগ হবে নতুন অধ্যায়: ‘রাশিয়ার ইতিহাস’। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, বইটি রাশিয়ান শিশুদের মধ্যে ঐতিহাসিক ক্ষোভের অনুভূতি জাগিয়ে তোলার জন্য এবং জাতির বেঁচে থাকার অস্তিত্বের লড়াইয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। পুতিন ব্যক্তিগতভাবে রাশিয়ার স্কুলে দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলার প্রচারণার নেতৃত্ব দিয়েছেন।
রাশিয়ার স্থানীয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সিএনএন-এর একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, সাত বা আট বছর বয়সি শিশুরা মৌলিক সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে। বিশেষ করে বেলগোরোদের শিশুরা জুলাই মাসে প্রশিক্ষণ গ্রহণে অংশ নিয়েছে। যার মধ্যে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের ব্যবহার, মেশিনগান একত্রিত করা অন্তর্ভুক্ত ছিল।
রাশিয়ার ভোলোগদা শহরে অনুষ্ঠিত একটি কুচকাওয়াজে, একটি ছোট শিশু অভিবাদন জানিয়ে একজন কর্মকর্তাকে বলেছিল, ‘কমরেড প্যারেড কমান্ডার! কুচকাওয়াজ প্রস্তুত। আমি কমান্ডার উলিয়ানা শুমেলোভা।’ রাশিয়ার সুদূর প্রাচ্যের সাখালিন থেকে আজভ সাগরের ইয়েস্ক শহর পর্যন্ত একই রকম দৃশ্য দেখা গেছে। আস্ট্রাখান শহরের স্কুলগুলোতেও নেওয়া হচ্ছে একই পদক্ষেপ। সারা দেশের স্কুলগুলোকে সামরিক পরিষেবায় মহিমান্বিত করা হচ্ছে।
সূত্র : সিএনএন