বাংলাদেশের কথাসাহিত্যিক ও লেখক অধ্যাপক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, আমাদের দেশে রিসার্চের কালচার তৈরি করে মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেশে রাখতে হবে। মেধাবী শিক্ষার্থীরা চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণ করতে চায়, বাংলাদেশে সেই সুযোগ না থাকার কারণে তারা বিদেশে চলে যায়।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শিল্প প্রতিষ্ঠানের সমঝোতা’ শীর্ষক দিনব্যাপী এক সেমিনারে অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া অ্যাকাডেমিক ভবনের প্রকৌশল অনুষদ গ্যালারীতে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারটি আয়োজন করে রাবির প্রকৌশল অনুষদ।
সেমিনারে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক বলেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনো বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে উঠতে পারেনি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু পড়াশোনা হয় কিন্তু গবেষণা নেই। ভারত আজকে নামমাত্র খরচে চাঁদের মাটিতে পা রেখেছে। কারণ তারা প্রচুর গবেষণা করে সবসময়। আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও গবেষণার পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের দেশে রিসার্চের কালচার তৈরি করে মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেশে রাখতে হবে। মেধাবী শিক্ষার্থীরা চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণ করতে চায়, বাংলাদেশে সেই সুযোগ না থাকার কারণে তারা বিদেশে চলে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়কে রিসার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবর্তন করতে হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠানের উচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তাদের প্রতিষ্ঠানে রিসার্চের সুযোগ করে দেওয়া। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে মোকাবেলা করার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
আরো পড়ুন : এআইয়ের যুগে টিকে থাকতে শিক্ষার্থীদের সচেতন হতে হবে : অধ্যাপক জাফর ইকবাল
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম বলেন, ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ভালো সিজিপিএ নিয়ে বের হয়ে যায়, কিন্তু তাদের অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগাচ্ছে না। উন্নয়নের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার সুযোগ করে না দেওয়ার কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিদেশে চলে যায়। আমাদের দেশের উন্নয়নের গতি বৃদ্ধি করতে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা যে জ্ঞান অর্জন করছি, তা প্রয়োগ করতে পারছি না। ওয়ার্কশপ রাখার পরও সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। বিশ্বে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাদের সঙ্গে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হবে। সেজন্য আমাদের উন্নয়নের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমার প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা আবার এগিয়ে যাব।
সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অনুষদের ডীন অধ্যাপক আবু জাফর মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন প্রমুখ।
রাবির ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্ছিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারহানা বিনতে সুফির সঞ্চালনায় দেশের ১৫ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৫৭ জন শিক্ষক, ১০০ জন শিক্ষার্থী, ২৫ জন অ্যালামনাই এবং ২২ টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র নির্বাহী পরিচালক ও প্রতিনিধিগণ সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।