বিএনপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মির্জা ফখরুলদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মিথ্যাচার এবং অসত্য, মনগড়া ও বানোয়াট বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতেই বিবৃতি প্রদান করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল আলমগীরের মর্মবেদনা আমরা বুঝি! প্রকৃতপক্ষে বিএনপির আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মির্জা ফখরুলদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। সুদূর লন্ডন থেকে যে ওহি নাজিল হয়, যে সিদ্ধান্ত আসে মুখ বন্ধ করে তা মেনে নিতে বাধ্য হন ফখরুল সাহেবরা।’
তিনি বলেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামির প্রেসক্রিপশনে পরিচালিত হয় বিএনপি; অগণতান্ত্রিক ও অগঠনতান্ত্রিকভাবে কমিটি ভাঙে-গড়ে, বহিষ্কার-পুরস্কার নির্ধারিত হয় এবং কমিটি ও মনোনয়ন নিয়ে বাণিজ্য চলে। আয়নার সামনে নিজের অসহায়-নিরুপায়-পরাধীন চেহারা দেখতে দেখতে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল সাহেব জনগণের বাক-স্বাধীনতাকে ওই একই ফ্রেমে বন্দি করে ফেলেছে! তাই মির্জা ফখরুল সাহেব তোতা পাখির মতো সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারে লিপ্ত থাকে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মানুষের বাক, ব্যক্তি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলেছেন। মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্য ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া কিছু নয়! কারণ বিএনপি কখনোই জনগণের বাক-স্বাধীনতা ও জনমতকে ধারণ করেনি। বিএনপির জন্মই হয়েছিল বন্দুকের নলের মুখে জনগণকে জিম্মি করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের বাক-স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অবাধ সুযোগ প্রতিষ্ঠায় অবিরাম আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশে মানুষের বাক, ব্যক্তি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সুসংহত হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের মধ্য দিয়ে মতপ্রকাশের অনিরুদ্ধ দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
তিনি বলেন, অর্ধশতাধিক বেসরকারি টেলিভিশন, এফএম রেডিও, কমিউনিটি রেডিও এবং সহস্রাধিক সংবাদপত্রের নিবন্ধন দিয়ে সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্প্রসারিত করেছে। সেই সাথে ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাক, ব্যক্তি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার দুয়ার উন্মুক্ত হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সুযোগের অপব্যবহার করে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দ প্রতিনিয়ত চিরায়ত ভঙ্গিতে সরকারের বিরুদ্ধে নিলর্জ্জভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। শুধু বাক-স্বাধীনতা ভোগ করাই নয়, নিজেদের ইচ্ছা মতো মনগড়া অপপ্রচার চালাতেও তারা কুণ্ঠাবোধ করে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা জনগণের কল্যাণে, গণ-আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশাকে ধারণ করেই সরকার পরিচালনা করে আসছে। মানুষকে নির্বাক করে রাখতে নয় বরং গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিধ্বনিকে প্রতিষ্ঠা করতেই পরিচালিত হয় সরকারের সকল উদ্যোগ।
তিনি বলেন, বিএনপি আমলে জনগণের বাক-স্বাধীনতা এবং ন্যূনতম নাগরিক অধিকারও ছিল না। বিএনপি রাষ্ট্রযন্ত্রকে অপব্যবহার করে গোষ্ঠীতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। বিএনপির শাসনামলে বিদ্যুতের দাবী করায় নিরীহ মানুষকে গুলি করে হত্যা, সারের দাবীতে আন্দোলন করায় কৃষককে গুলি করে হত্যা, বেতন-বোনাস দাবি করায় মিছিলে গুলি চালিয়ে শ্রমিক হত্যাসহ জনগণের ওপর স্টিম রোলার চালানোর মধ্য দিয়ে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। রাষ্ট্রযন্ত্রকে অপব্যবহার করে বিরোধীদলকে নিশ্চিহ্ন করতে ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে ২১ আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলার মতো ভয়াবহ গণহত্যা সংঘটিত করেছিল বিএনপি।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের নীতি হলো ক্ষমতাকে সেবার সুযোগ হিসেবে দেখা। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই দেশের অর্থনীতি মজবুত ভীতের উপর দাঁড়িয়েছে সার্বিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। আমরা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত-সমৃদ্ধ মানবিক-কল্যাণকর স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ বলে উল্লেখ করেন তিনি।