দৈনিক শিক্ষাডটকম, শাবিপ্রবি : ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)।
http://admission.sust.edu ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদনের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কেবল গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে। এবার চা শ্রমিক সন্তান ও খেলোয়াড় কোটায় আসন বৃদ্ধি পেয়েছে।
বুধবার ২৪ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব ও স্কুল অব এগ্রিকালচার অ্যান্ড মিনারেল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: আবু সাঈদ আরফিন খাঁন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, সমন্বিত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করতে পারবে। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ‘এ’ ইউনিটে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীরা শাবিপ্রবির ‘এ’ ও ‘বি’ ইউনিটে পৃথকভাবে এবং ‘বি’ ও ‘সি’ ইউনিটে অংশগ্রহণকারীরা ‘বি’ ইউনিটে আবেদন করতে পারবে।
যেসকল পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে যারা গণিত ও জীববিজ্ঞানে অংশগ্রহণ করেছে তারা ‘এ’ ও ‘বি’ ইউনিটের প্রতিটি বিভাগে, যারা গণিত ও আইসিটিতে অংশগ্রহণ করেছে তারা ‘এ’ ইউনিটের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি ও বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি ছাড়া সকল বিভাগে এবং ‘বি’ ইউনিটে সকল বিভাগে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে জীববিজ্ঞান ও আইসিটিতে অংশগ্রহণ করা পরীক্ষার্থীরা ‘এ’ ইউনিটের ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, জিওগ্রাফি এন্ড এনভায়রনমেন্ট, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি, বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগে এবং ‘বি’ ইউনিটে অর্থনীতি বিভাগ ছাড়া প্রতিটি বিভাগে ভর্তির আবেদন করতে পারবে। আর্কিটেকচার বিভাগে ভর্তির জন্য ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীদের আগামী ২৭ এপ্রিল ড্রয়িং ও স্থাপত্য বিষয়ক সাধারণ জ্ঞানের ওপর ১ ঘন্টা সময়ে ৩০ নম্বরের একটি ড্রয়িং ও স্থাপত্য বিষয়ক সাধারণ জ্ঞানের একটি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।
‘এ’ ইউনিটভুক্ত বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে পদার্থবিজ্ঞান (আসন সংখ্যা ৬৫), রসায়ন (আসন সংখ্যা ৬৫), গণিত (আসন সংখ্যা ৮০), পরিসংখ্যান (আসন সংখ্যা ৮০), কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (আসন সংখ্যা ১০০), কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স (আসন সংখ্যা ৫০), ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (আসন সংখ্যা ৫০), সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং (আসন সংখ্যা ৫০), ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (আসন সংখ্যা ৫০) এবং ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজি (আসন সংখ্যা ৪০)।
পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং (আসন সংখ্যা ৩৫), ভূগোল ও পরিবেশ (আসন সংখ্যা ৫০), মেকানিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং (আসন সংখ্যা ৩৫), সমুদ্রবিজ্ঞান (আসন সংখ্যা ৩০), সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং (আসন সংখ্যা ৫০), জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি (আসন সংখ্যা ৩৫), বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি (আসন সংখ্যা ৩৫), ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এভায়রনমেন্টাল সায়েন্স (আসন সংখ্যা ৫৫), আর্কিটেকচার (আসন সংখ্যা ৩০)
‘বি’ ইউনিটভুক্ত (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য শাখায়) বিভাগসমূহের মধ্যে রয়েছে-অর্থনীতি (আসন সংখ্যা ৬৬), সমাজবিজ্ঞান (আসন সংখ্যা ৬৬টি), পলিটিক্যাল স্টাডিজ (আসন সংখ্যা ৬৬টি), লোকপ্রশাসন (আসন সংখ্যা ৬৬), নৃবিজ্ঞান (আসন সংখ্যা ৬৬), সমাজকর্ম (আসন সংখ্যা ৬৬), ইংরেজি (আসন সংখ্যা ৫০) এবং বাংলায় (আসন সংখ্যা ৬০) এসব আসন রয়েছে।বসি ইউনিটভুক্ত (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য শাখায়) ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগে আসন সংখ্যা।
এছাড়া কোটার আসন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান (২৮ জন), ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী/জাতিসত্ত্বা/হরিজন-দলিত কোটায় ২৮ জন, প্রতিবন্ধী কোটায় ১৪ জন, চা শ্রমিক কোটায় ৫ জন যা আগে ছিলো ৪ জন, পোষ্য কোটায় ২০ জন এবং খেলোয়াড় কোটায় ১০ জন যা আগে ছিলো ৬ জন। সর্বমোট ১০৫টি আসন সংরক্ষিত রয়েছে।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড,আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড, আন্তর্জাতিক পদার্থবিজ্ঞান অলিম্পিয়াড এবং অন্যান্য স্বীকৃত আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে স্বর্ণ, রৌপ্য অথবা ব্রোঞ্জ মেডেল প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ব্যতীতই আবেদন করতে পারবে। তবে তাদের অনুচ্ছেদ ৩ দশমিক ১-এ বর্ণিত ন্যূনতম যোগ্যতা থাকতে হবে। সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডটি মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের হতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচী:
শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টা হতে ১টা পর্যন্ত, ৯ টি সেন্টারে এ ইউনিটের ৫ হাজার ৮১০ জন পরীক্ষায় অংশ নিবে। এবং আর্কিটেকচার ব্যবহারিক (ড্রয়ি) পরীক্ষায় বিকাল ৩টা হতে ৪টা পর্যন্ত ১টি কেন্দ্রে অংশ নিবে ২৫৬ জন।
শুক্রবার (৩ মে) বিকাল টা হতে ৪টা পর্যন্ত ইউনিট বি (মানবিক) ইউনিটের ৬টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশ নিবে ২ হাজার ৪০৯ জন। শুক্রবার ১০ মে বেলা ১১টা হতে ১২টা পর্যন্ত ২ টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিবে ৭২৯ জন।
ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব ও স্কুল অব এগ্রিকালচার অ্যান্ড মিনারেল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু সাঈদ আরফিন খাঁন নোবেল বলেন, চা শ্রমিকদের সন্তানদের পড়াশোনায় আগ্রহী করতে শাবিপ্রবি তাঁদের কোটা ব্যবস্থা চালু করে। এটি এবার বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া আমাদের বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় খেলোয়াড় যেভাবে সুনাম কুড়াচ্ছে সে প্রেক্ষিতে সামনের দিনগুলোতে যেন শাবিপ্রবি আরও সুনাম বৃদ্ধি করতে পারে তাই আমরা খেলোয়ারদের কোটা বৃদ্ধি করেছি। যেন শুরু থেকেই আমরা সেরাসের সেরাকে ভর্তি করাতে পারি।
সার্বিক বিষয়ে শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, পূর্বের ন্যায় এবারো ভর্তি পরীক্ষায় যাবতীয় ডিজিটাল জালিয়াতি ঠেকাতে আমরা বদ্ধ পরিকর। যেকোনো ধরণের অসুদুপায় অবলম্বনকারীকে আইনের আওতায় আনা হবে। ভর্তিতে আমরা ডোপ টেস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবো এবং সকল শিক্ষার্থী স্বাস্থ্যবীমার আওতায় থাকবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে আমরাই প্রথম চা এবার চা শ্রমিক সন্তানদের জন্য কোটা দিয়েছি। কারণ এ অঞ্চলে চা শ্রমিক সন্তানেরা অনেক পরিশ্রমে ফলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আসে। তাই তাঁদের কথা বিবেচনা করে কোটায় আসন বাড়ানো হয়েছে।