নারায়ণগঞ্জে এক শিক্ষককে মারধর করার কারণে আড়াইহাজার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সাত শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইশতিয়াক আহমেদ এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ইউএনও ইশতিয়াক আহমেদের সভাপতিত্বে বিদ্যালয়ের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সুলতানসাদী উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে আড়াইহাজার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্র দীর্ঘ দিন ধরে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। স্থানীয়রা ওই ছাত্রকে এ নিয়ে বেশ কয়েকবার সতর্ক করলেও সে বন্ধুদের নিয়ে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। জুনের প্রথম সপ্তাহে স্থানীয়রা ওই ছাত্র ও তার বন্ধুদের আটক করে সুলতানসাদী উচ্চ বিদ্যালয়ে সোপর্দ করে। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রদীপ বিশ্বাস আড়াইহাজার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থী ও তার বন্ধুদেরকে ছাত্রীর পেছনে না ঘুরে পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়ার কথা বলে সতর্ক করে দেন। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানাবেন বলেও জানান।
জানা গেছে, এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১০ জুন দুপুরে শিক্ষক প্রদীপ বিশ্বাস আড়াইহাজার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত কাজ শেষে বের হলে অতর্কিতভাবে আকিব ও তার সহযোগীরা তার ওপর হামলা করে। তার পরনের জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলে এবং বেধরক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। আশপাশের শিক্ষকরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এলে ওই শিক্ষার্থীরা পালিয়ে যায়। পরে প্রদীপ বিশ্বাসকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় শিক্ষক সমাজে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। পরে ইউএনও এ ব্যপারে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। গতকাল বৃহস্পতিবার আড়াইহাজার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ইউএনও ইশতিয়াক আহমেদের সভাপতিত্বে বিদ্যালয়ের জরুরি সভায় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজের অপরাধে ওই সাত শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এ ব্যাপারে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি ও দুপ্তারা সেন্ট্রাল করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন সরকার বলেন, সরকারি নির্দেশনায় আড়াইহাজার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণের আসেন সুলতাসাদী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রদীপ বিশ্বাস। তার ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনায় শিক্ষকসমাজ বিস্মিত। এটা কাম্য ছিল না। এ ঘটনায় ইউএনও মহোদয় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।
ইউএনও ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, শিক্ষকরা অত্যন্ত সম্মানীয়। শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ব্যাপারে সাত শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা কোনো বিদ্যালয়ে যাতে না ঘটে সে ব্যাপারেও সতর্কতামূলক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।