মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান করছেন শিক্ষকরা। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ব্যানারে শিক্ষকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। শিক্ষকদের অবস্থানে রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের পল্টন থেকে কদম ফোয়ারামুখী রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে।
রোববার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষকরা প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছে অসংখ্য শিক্ষক। তাদের অবস্থান কর্মসূচির কারণে পল্টন থেকে কদম ফোয়ারার দিকের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে যেসব বাস পল্টন থেকে আসছে, তারা ঘুরে পল্টনমুখী রাস্তা দিয়ে পার হচ্ছে। এক লেনে দুইমুখী গাড়ির চলাচলে সৃষ্টি হয়েছে যানজট।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচিতে থাকবেন বলেও তারা জানান।
গত মঙ্গলবার থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করলেও রোববার থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালানোর ঘোষণা করেছিলো বিটিএ। তবে সকাল থেকে রাজধানীর বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস চলতে দেখা গেছে।
বিটিএর কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, আগামীকাল সোমবার থেকে অবস্থানরত শিক্ষকদের সংখ্যা আরো বাড়বে।
তারা বলছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। একই কারিকুলামে একই সিলেবাসে পাঠদান করিয়েও সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধানদের থেকে এক ধাপ নিচে বেতন দেয়া হচ্ছে।
বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। তাছাড়া বিগত কয়েক বছর যাবত অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কেটে নেয়া হচ্ছে। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করা হলেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা স্মার্ট করতে প্রয়োজন স্মার্ট শিক্ষক। তাই স্মার্ট শিক্ষক পেতে শিক্ষায় বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের বিকল্প নেই। এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয় সরকারি কোষাগারে জমা নিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণ করতে সরকারের খুব বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে না বলে মন্তব্য করেন তারা।