শিক্ষকদের ‘তিন বছর বসিয়ে বেতন দেয়া’ বক্তব্যের প্রতিবাদ - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষকদের ‘তিন বছর বসিয়ে বেতন দেয়া’ বক্তব্যের প্রতিবাদ

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

সরকারি প্রাথমিক  বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের করোনাকালীন সময়ে প্রায় ৩ বছর বসিয়ে বেতন ভাতা দেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের করা মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ। গত ২৩ মার্চ একটি দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদনে প্রতিমন্ত্রী এ মন্তব্য করেছেন বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।  

রোববার পরিষদের পক্ষ থেকে পাঠানো এক যুক্ত বিবৃতিতে সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এম এ ছিদ্দিক মিয়া প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। 

তারা বলেন, সারাদেশের অফিস আদালতসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করোনাকালীন সময়ে বন্ধ ছিলো। এর ফলে শুধু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নয়, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি হয়েছে। প্রাথমিকের ওই সময়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা এখন উচ্চবিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছে। সেহেতু প্রাথমিকের করোনার তেমন শিখন ঘাটতি নেই। তবে করোনার পরে শিক্ষক সংকটের কারণে শিখন ঘাটতি বিদ্যমান। যা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সৃষ্ট। করোনাকালীন শিখন ঘাটতি রোধে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। উদ্যোগগুলো হলো শিক্ষকদের প্রতিটি বিষয়ে অনলাইনে ক্লাস, শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অ্যাসাইনমেন্ট শিট বিতরণ ও সংগ্রহ,পড়া বুঝিয়ে দেয়া, পুষ্টিসমৃদ্ধ বিস্কুট বিতরণ, শারীরিক ও মানসিক সুস্থ্যতাসহ সংক্রামক মুক্ত থাকার পরামর্শ। এসব কার্যক্রমের ফল প্রতিনিয়ত উপজেলা শিক্ষা অফিসকে জানাতে হতো শিক্ষকদের। স্কুল থেকে অফিসিয়াল পর্যায় পর্যন্ত প্রায়ই ভার্চ্যুয়াল সভা করে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হতো। প্রাথমিকের শিক্ষক ছাড়া অন্যকোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের ভাগ্যে শিখন ঘাটতি দূর করার দায়িত্ব জুটে নাই। এছাড়া করোনা পরবর্তী প্রতিদিন শিখন ঘাটতি দূর করার জন্য রুটিনে একটা ক্লাস অন্তর্ভুক্ত ছিলো। এতো কাজ করার পর প্রাথমিকের শিক্ষকদের বসিয়ে বেতন দেয়া হয়েছে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ভিত্তিহীন। তার এ বক্তব্যে প্রাথমিকের শিক্ষক সমাজ বিস্মিত ও মর্মাহত। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টরা প্রায় ৩ বছর ধরে বিশাল শিক্ষক সংকট তৈরি করে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর সুনাম নষ্ট ও শিখন ঘাটতি সৃষ্টি করেছেন। এছাড়া ছুটির তালিকাসহ নানা বৈষম্যে জর্জরিত করে মাননীয় প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টরা বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদর্শের পরিপন্থী কাজ করে প্রাথমিকের সুনাম ও অস্তিত্ব বিপন্ন করে চলেছেন।

বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের পক্ষ থেকে কিন্ডারগার্টেন, সরকারি-বেসরকারি হাইস্কুলের প্রাথমিক শাখার সঙ্গে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিন্ন ছুটি, মূল্যায়ন পদ্ধতি, বই ও সময়সূচি প্রণয়নের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাথমিক শাখা তুলে দিয়ে প্রাথমিকের শিক্ষার্থী সংকট দূর করার এবং প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে পরীক্ষণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেলের বৈষ্যম্যের দূর করার দাবি জনান। 

নেতারা আরো বলেন, নানা বৈষম্যে জর্জিত প্রাথমিক শিক্ষা। এ বৈষম্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁরই সূযোগ্য কন্যার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদর্শের পরিপন্থী। বিশেষ করে রমজান মাসে শিশুদের মক্তব মসজিদ বা বাসায় হুজুর রেখে কায়দা আমপারা ও কোরআন শরীফ পড়া থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি অসংখ্য শিশু রোজা রাখার অভ্যাসকে বিঘ্নিত করছে। এক কথায় ধর্মপ্রাণ অভিভাবক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনুভূতিতে আঘাত হানছে। এ প্রেক্ষাপটে আগামী ৩০ মার্চ শিক্ষক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের স্কুল ছুটির ১ ঘন্টা আগে প্রাথমিকের বৈষম্যের হাত থেকে মুক্তির জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া কামনা করার জন্য নেতারা আহ্বান জানিয়েছেন। 

তারা আরো বলেছেন, ১ ঘন্টা কর্মবিরতি পালনসহ দোয়া অনুষ্ঠান করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব রক্ষাসহ সুনাম ও বৈষম্যমুক্ত করার প্রত্যাশার রইল।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031430721282959