প্রাণঘাতী রোগ ডেঙ্গু মোকাবেলায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
তিনি বলেছেন, “ডেঙ্গু একটি প্রাণঘাতী রোগ, কিন্তু এটা প্রতিরোধযোগ্য। এ কারণে সবাইকে দায়িত্ব নিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হবে। সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ডেঙ্গুর কারণে প্রতিবছরই আমরা আমাদের অনেক প্রিয়জনকে হারাই। যার প্রিয়জন চলে যায়, সে বোঝে কী ক্ষতি হল।
“যেহেতু প্রতিরোধযোগ্য, এর প্রতিরোধ না করা আমি মনে করি অন্যায়ই। আমরা কেন সচেতন হব না? যে জাতি যুদ্ধ করে বিজয়ী হতে পারে, সে জাতি মশার সাথে কি যুদ্ধ করতে পারবে না?”
শনিবার ঢাকার লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বাড়াতে ডিএনসিসি এলাকার সব স্কুল-কলেজের অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ব্ক্তব্য রাখছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, “শিক্ষকদের কথার অনেক দাম। তারা যা শেখায় শিক্ষার্থীরা তা আত্মস্থ করে। শিক্ষার্থীরা নিজেরা সেগুলো চর্চা করে এবং অন্যদেরও শেখাতে পারে। সচেতনতার বার্তা সম্বলিত লিফলেটগুলো আমরা আপনাদের দিয়ে দিব, সেগুলো শিক্ষার্থীদের দেবেন।
“আপনারা অ্যাসেম্বলির সময় শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে জানাবেন। শিক্ষার্থীদের টিম করে করে স্কুল-কলেজের আঙিনা পরিষ্কার করবে। কোথাও পানি জমে থাকলে সেগুলো ফেলে দেবে। এগুলো করার মাধ্যমে তাদের অভ্যাস গড়ে উঠবে। শিক্ষকরা সচেতন হলে যেকোনো সামাজিক আন্দোলন সফল হওয়া সম্ভব।”
এ বছর বর্ষা শুরুর আগেই ডেঙ্গু আক্রান্ত এবং মৃত্যুর ঘটনায় সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শনিবার পর্যন্ত সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৪ হাজার ৬০৩ জন। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৩ জন।
অনুষ্ঠানে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, “বাবা-মার পরে শিক্ষকরাই শিশুদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মাঝে যেকোনো বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারেন।
তিনি বলেন, “কী কারণে এইডিস মশা জন্মায়, এইডিস মশার ভয়াবহতা সম্পর্কে শিশুদের জানাতে হবে। আমরা বিদেশে দেখেছি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের, প্রাইমারি স্কুলের শিশুদের এইডিস মশা নিধনে সচেতনতা শিক্ষা দেওয়া হয়।
“কারণ শিশুরাই বাসা-বাড়িতে গিয়ে এটি অ্যাপ্লাই করবে। তারা বাবা-মা, দাদা-দাদি, নানা-নানিদের জানাবে বাসা বাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে, কোনোভাবেই পানি জমতে দেওয়া যাবে না। তারা সবাইকে জানাবে কীভাবে এইডিস মশা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।”
ঢাকা ১৩ আসনের সংসদ সদস্য সাদেক খান, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান, ডিএনসিসি মেয়রের উপদেষ্টা ও কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, ডিএনসিসির বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।