শিক্ষকের স্কেলের আঘাতে ছাত্রের চোখে জখম - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষকের স্কেলের আঘাতে ছাত্রের চোখে জখম

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

নগরীতে পরীক্ষা চলাকালে ৩য় শ্রেণির এক ছাত্রকে বেধড়ক পিটিয়ে চোখে মারাত্মকভাবে জখম করার ঘটনায় অভিযুক্ত ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে এখনো ব্যবস্থা নেয়নি চট্টগ্রাম মডেল পাবলিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। এই সংক্রান্তে থানায়, জেলা প্রশাসন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ করা হলেও ওই স্কুলের অভিযুক্ত শিক্ষিকা শতাব্দী বড়ুয়ার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্টরা। এদিকে মারধরের কারণে চোখে গুরুতর আহত হওয়ায় জয় দাশ (৯) নামে ওই শিক্ষার্থীর চোখ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি তার শিক্ষাজীবনও বিপন্ন হতে বসেছে। গত ৩ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আহত ছাত্রের অভিভাবক। পরদিন কোতোয়ালি থানা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ করা হয়, যার অনুলিপি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর পাঠানো হয়।

 

আহত শিক্ষার্থী জয়ের বাবা সুমন কান্তি দাশ বলেন, নগরীর মোমিন রোডের (ডিসি হিল সংলগ্ন) চট্টগ্রাম মডেল পাবলিক স্কুলের ৩য় শ্রেণির ছাত্র আমার ছেলে। গত ৩০ নভেম্বর বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষা হলে দুষ্টুমির অভিযোগ এনে আমার ছেলেকে কাঠের স্কেল দিয়ে চোখে ও মাথায় এলোপাতাড়ি মেরে রক্তাক্ত করেন শিক্ষিকা শতাব্দী বড়ুয়া। ছেলের চোখের ওপর রক্ত দেখে বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে প্রধান শিক্ষিকা শিল্পী রায় বরাবর মৌখিক অভিযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে মিথ্যে আশ্বাস দেন। পরদিন ১ ডিসেম্বর বিকাল থেকে আমার ছেলে ব্যথার জন্য চোখ খুলতে না পারায় একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে গেলে তিনি চোখের অভ্যন্তরে মারাত্মক আঘাত

হয়েছে বলে জানান এবং ব্যান্ডেজ করে দেন। ডাক্তার বলেছেন, চোখের ভেতরের একটি গ্রন্থি ছিঁড়ে গেছে। চোখের ওপর প্রেশার পড়লে বড় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন, দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত এবং সংক্ষুব্ধ। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পর থেকে সে পরীক্ষা দিতে পারছে না। আজ এতদিন হওয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বরং প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন এবং পরে অভিভাবককে ডাকা হবে বলে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। বিন্দুমাত্র দুঃখ প্রকাশ বা সহমর্মিতা অভিযুক্ত শিক্ষক ও স্কুলের পক্ষ

থেকে জানানো হয়নি। আমরা এই অমানবিক ঘটনার জন্য দায়ী শিক্ষিকার কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি যাতে ভবিষ্যতে অন্য কোনো বাবা-মার সন্তানকে এভাবে শিক্ষক/শিক্ষিকার মারধরে রক্তাক্ত হতে না হয়।

আহত ছাত্র জয় জানায়, ‘পরীক্ষার হলে পেছনের বেঞ্চ থেকে আমার বন্ধু আমাকে মারছিল। এ সময় স্কেল দিয়ে ক্লাসের টেবিলে বাড়ি দেয়ায় শতাব্দী টিচার আমাকে হাতে, মাথায় ও চোখে মেরেছেন। আমার চোখ থেকে রক্ত পড়েছে। প্রচণ্ড ব্যথা হয়েছে।’

তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিল্পী রায় বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এটা আমাদের শিক্ষকের দ্বারা হয়নি। পরীক্ষা শেষে দুষ্টুমি করতে গিয়ে পড়ে যায় ওই ছাত্র। আর এতে চোখে ব্যথা পায় সে। আমি ওই ছাত্রের চোখে তেমন আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাইনি। কিন্তু এ দিনের পর থেকে অভিযোগ আসতে থাকে। এর চেয়ে বেশি বলতে পারব না। এখন আমরা অন্য কাজে ব্যস্ত আছি বলে তিনি ফোন কল কেটে দেন।

কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা এনায়েতবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ সুকান্ত চৌধুরী বলেন, স্কুলে শিশুকে মারধরের একটি অভিযোগ পেয়েছি। দুইপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগকারী থানায় মামলা করলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. আবু রায়হান দোলন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। এখন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029299259185791