দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : আইনি লড়াইয়েও হেরে গিয়ে ফের রাজপথে নেমেছেন কিছু বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধনধারী। গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য তারা শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পুড়িয়েছেন। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ৫ম গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন তারা। এ দাবিতে তৈরি করা ব্যানারে ১ থেকে ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধন সনদধারী ফোরাম পরিচয় দেন তারা। জামাতপন্থী কয়েকটি ভূইফোঁড় অনলাইন পত্রিকা ও টেলিভিশনের কথিত নামধারী সাংবাদিকদের যৌথ প্রযোজনায় মানববন্ধন ও সনদ পোড়ানো হয়। তাদের সঙ্গে থাকা ব্যানারে সনদ পোড়ানো বা প্রতীকী সনদ পোড়ানোর বিষয় উল্লেখ ছিলো না। ডিজিটাল ব্যানারেও পোড়ানোর কথা উল্লেখ ছিলো না।
প্রতিবাদ সমাবেশে ১-১৫তম শিক্ষক নিবন্ধন সনদধারী ফোরাম সভাপতি রাসেল আহসান, সাধারণ সম্পাদক মো. ওবাইদুল ইসলাম এবং মো. মাহমুদুল হাসানসহ দশ-পনেরোজন উপস্থিত ছিলেন।
তারা বলেন, বর্তমানে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৯৬ হাজারের অধিক শিক্ষক ঘাটতি নিরসনের লক্ষ্যে শূন্যপদ পূরণে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের উদ্যোগও গ্রহণ করেছে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পর্যায়ে শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক।
সরকারি বিধি মোতাবেক কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়স অনূর্ধ্ব ৩৫ থাকা সত্ত্বেও আসন্ন ৫ম গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার এক ষড়যন্ত্র চলছে বলেও দাবি করেন তারা।
তারা আরো দাবি করেন, ১-১৫তম সর নিবন্ধন সনদধারী এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়স অনূর্ধ্ব ৩৫ আবেদনের যোগ্য।
এদিকে, সরাসরি নিয়োগের জন্য এনটিআরসিএ কর্তৃক নেয়া পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নয়, শুধু বেসরকারি কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়ার প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণী নিবন্ধন সনদ দিয়েই সরাসরি এমপিওভুক্ত শিক্ষক পদে নিয়োগ পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র।
শুধু টাকা হাতিয়ে নেয়াই নয়, গত সপ্তাহে চেম্বার আদালত কী বলেছে ১ থেকে ১২তম নিবন্ধনধারীদের নিয়ে সেই তথ্যটুকুও খোলাসা করা হয়নি সহজ-সরল নিবন্ধনধারীদের কাছে। নির্বাহী বিভাগ বলে যে একটা কিছু আছে সেটাও নিবন্ধনধারী ও শিক্ষক প্রত্যাশীদের প্রায় ভুলিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা হয়েছিলো! গত কয়েক বছর ধরে কথায় কথায় তাদেরকে আশ্বাস দেয়া হতো, অমুককে ডাকাবো, নিয়োগ দিয়ে দেবো ইত্যাদি ইত্যাদি।
ঈদ সামনে রেখে সর্বশেষ দাও মারাটাও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উসকানি দিয়ে তাদেরকে রাস্তায় নামিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলেও মনে করছেন অনেকে।
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তারা মানবন্ধন ও প্রতিবাদ করবেন বলে ফেসবুকে ঘোষণা দেন এবং সাংবাদিকদের জানান। শুধু ১ থেকে ১২তম নয়। নতুন কৌশল হিসেবে ১৩, ১৪ ও ১৫তম পরীক্ষায় উত্তীর্ণদেরও তাদের সঙ্গে রাখার ঘোষণা দেয়া হয়। বয়স অনূর্ধ্ব ৩৫। বেলা সাড়ে বারোটা অব্দি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কাউকে দেখা যায়নি। তবে, সাড়ে বারেটার পর চল্লিশোর্ধ্ব নিবন্ধনধারী দশ/বারো জনকে দেখা যায়। একটা ব্যানার হাতে কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। মেয়াদউত্তীর্ণ সনদের ফটোকপিতে আগুন জালিয়ে দিয়েছেন তারা। ঈদের পরে তারা প্রেসক্লাবের সামনে রক্ত মিছিল করার পরিকল্পনাও করেছে বলে কয়েকজন নিবন্ধনধারী দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানিয়েছেন।
তাদের এ কর্মসূচিতে জামায়াত-বিএনপিপন্থী কিছু ভুইফোঁড় অনলাইন পত্রিকার নামধারী সাংবাদিক ও ইউটিউবার সর্বাত্মক সহায়তা করেন বলেও প্রেসক্লাবের সামনে কর্মরতরা জানান।