বেসরকারি ৬৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তিতে আদালত স্থগিতাদেশ দিয়েছেন দাবি করে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের কেউ কেউ গুজব ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কর্মকর্তারা। গত রোববার এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে ইনডেক্সধারী প্রার্থীদের আবেদনের সুযোগ না দেয়া কেনো অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। কর্মকর্তারা বলছেন, এ রুলের সঙ্গে আদালত গণবিজ্ঞপ্তিতে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন দাবি করে ইনডেক্সধারী প্রার্থীদের কেউ কেউ গুজব ছড়াচ্ছেন। একটি প্রচার মাধ্যমে কর্মরত একজন নামধারী কর্মী সে গুজবে ঘি ঢালছেন। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সরব চাকরিপ্রত্যাশী প্রার্থী ও শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে এনটিআরসিএর সচিব মো. ওবায়দুর রহমান মঙ্গলবার দুপুরে দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, গণবিজ্ঞপ্তিতে স্থগিতাদেশ দেয়ার যে খবর ছড়ানো হচ্ছে তা সঠিক নয়। আমরা যতদূর জানতে পেরেছি আদালত একটি রুল জারি করেছেন। আমরা রুলের জবাব আদালতকে দেবো।
তিনি আরও বলেন, ইনডেক্সধারীদের আবেদনের সুযোগ নিয়ে যে রুল আদালত জারি করেছেন, তা শুনে যতদূর বুঝতে পেরেছি আদালত জানতে চেয়েছেন কেনো তাদের আবেদনের সুযোগ দেয়া হবে না। তাই স্থগিতাদেশ যদি দেয়া হয় তা হবে ইনডেক্সধারীদের আবেদনের সুযোগ সাময়িক স্থগিত করে জারি করা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের ওপর। এর ইফেক্ট গণবিজ্ঞপ্তির আবেদন প্রক্রিয়ায় পড়বে না।
আগে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সরাসরি এনটিআরসিএর গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবেদনের সুযোগ পেতেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থা না থাকায় এমপিও নীতিমালাগুলোতে তাদের জন্য এ সুযোগ রাখা হয়েছিলো। তাদের বদলির জন্য আলাদা নীতিমালা করার কথা বলা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। কিন্তু নিজ বাড়ি থেকে দূরের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা এমপিওভুক্ত বা ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের জন্য নতুন প্রতিষ্ঠানে নতুন করে নিয়োগ পাওয়ার বিধান রাখা হয়েছিলো এমপিও নীতিমালায়। সে অনুসারে ইনডেক্সধারী বা এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সমপদে বা সমস্কেলের পদে নিয়োগের আবেদন করতে পারতেন। তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে এমপিও নীতিমালার এ বিধান অনুসারে আবেদন করা হাজার হাজার শিক্ষককে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ সুপারিশ করে এনটিআরসিএ। কিন্তু এর ফলে অনেক নিবন্ধিত প্রার্থী নিয়োগ পাননি। আবার যেসব ইনডেক্সধারী শিক্ষক নতুন প্রতিষ্ঠানে সুপারিশ পেয়ে যোগদান করেছেন তাদের আগের পদগুলো খালিই থেকে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের অনুসরণীয় পরিপত্রে কর্মরত শিক্ষকদের আবেদনের সুযোগ সংক্রান্ত অনুচ্ছেদটি স্থগিত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ পরিস্থিতিতে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা নতুন নিয়োগ পেতেও আবেদনের সুযোগ পাচ্ছেন না।
এমন পরিস্থিতিতে ৬৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু করেছে এনটিআরসিএ। সাধারণ নিবন্ধিত প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষক নিয়োগের অনুসরণীয় পরিপত্রে কর্মরত শিক্ষকদের আবেদনের সুযোগ সংক্রান্ত অনুচ্ছেদটি স্থগিত করার পরই একটি প্রচার মাধ্যমে কর্মরত একটি নামধারী সাংবাদিক নতুন ব্যবসা খুলেছেন। তিনি ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি গ্রুপ খুলে একত্রিত করে তাদের দিয়ে এনটিআরসিএর বিরুদ্ধে রিট করিয়েছেন। সে রিটের প্রেক্ষিতে গত রোববার এক রুল জারি করেছেন আদালত। সে রুল জারির পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইনডেক্সধারী প্রার্থীদের কেউ কেউ গণবিজ্ঞপ্তিতে স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে গুজব ছড়াচ্ছেন। গুজববাজরা দৈনিক আমাদের বার্তা ও দৈনিক শিক্ষাডটকমের কর্মীদের নামও ব্যবহার করছেন।
এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ প্রার্থীরা বিভ্রান্ত। তারা শিক্ষা বিষয়ক একমাত্র প্রিন্ট পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তা ও দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন। প্রার্থীরা ইমেইল, মুঠোফোন ও প্রতিবেদকের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন।
এমন পরিস্থিতিতে এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা বলছেন, আদালত থেকে যে রুল জারি করা হয়েছে তাতে জানতে চাওয়া হয়েছে কেনো ইনডেক্সধারীদের আবেদনের সুযোগ দেয়া হবে না। গণবিজ্ঞপ্তি স্থগিত করা বা আবেদন গ্রহণ স্থগিত করার কোনো নির্দেশনা আদালত থেকে দেয়া হয়নি।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।