দৈনিক শিক্ষাডটকম, মাদারীপুর: মাদারীপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের অন্যতম সদস্য রনি বিশ্বাসকে (২২) গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতার রনি রাজৈর উপজেলার নাগরদী গ্রামের হৃদকমল বিশ্বাসের ছেলে। এ নিয়ে এই মামলায় গ্রেফতার হয়েছে মোট ৯ জন।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) ভোরে রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, 'গত ২৯ মার্চ মাদারীপুর জেলায় সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ১৮টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় টাকার বিনিময়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তরপত্র সরবরাহ করে একটি চক্র। পরীক্ষা চলাকালীন বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আটক করা হয় ৮ জন পরীক্ষার্থীকে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ইলেকট্টিক ডিভাইস ও একাধিক মোবাইল ফোন।
পরে এ ঘটনায় সদর উপজেলার প্রাথমিক অফিসের উচ্চমান সহকারী রেজাউল করিম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ১০ জন এজাহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনের কথা উল্লেখ করা হয়।
পরে মামলার তদন্ত শুরু করে জেলার গোয়েন্দা পুলিশ। অভিযান চালিয়ে চক্রের অন্যতম সদস্য রনি বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশের টিম। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে অভিযুক্ত রনি বিশ্বাস। পরে তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জানা যায়, পরীক্ষা চলাকালীন কুলপদ্বী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ইলেকট্টিক ডিভাইসসহ শিবচর উপজেলার পশ্চিম নিলখী গ্রামের হাবিবুর রহমান মাতুব্বরের ছেলে নোমান আহম্মেদ (২৬) নামে একজনকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে মাদারীপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্র থেকে রাজৈর উপজেলার চৌরাশী গ্রামের আশুতোষ রায়ের ছেলে সঞ্জয় রায়কে (৩২) আটক করে পুলিশ।
একইভাবে ডিভাইসসহ আলহাজ্জ্ব আমিনউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে আটক করা হয় শিবচরের ইয়াসিন হাজিরকান্দি গ্রামের সরোয়ার মিয়ার মেয়ে সাথী আক্তার (৩০), রাজৈরের উল্লাবাড়ি গ্রামের পবিত্র মণ্ডলের স্ত্রী তৃষ্ণা বালা (২৯), সামছুন্নাহার ভুঁইয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে আটক করা হয় কদমবাড়ি গ্রামের বিজয় কুমার বাড়ৈর মেয়ে মুক্তি বাড়ৈ (২৬), জুলিওকুড়ি উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে আটক করা হয় রাজৈরের আমগ্রামের বুদ্ধিমত্ত হাওলাদারের মেয়ে দুর্গা হাওলাদার (৩২), রাজৈরের নয়াকান্দি গ্রামের নির্মণ কুমার বৈদ্যের মেয়ে নিপা বৈদ্য (২৭), আমগ্রামের সাধন কীত্তনীয়ার মেয়ে শিখা কীত্তনীয়া (৩২)।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, 'চুক্তিভিত্তিক চক্রের সদস্যরা প্রশ্নপত্র উত্তরসহ বিক্রি করে। এই চক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে তুলেছে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। এই চক্রের বাকি সদস্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। '