সংকট কাটাতে ও নির্ভুলভাবে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক নিয়োগের প্রার্থী বাছাইয়ে শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। বর্তমানে বছরে একবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ই-রেজিস্ট্রেশন ও চাহিদা এন্ট্রি করা হলেও সারা বছরের জন্য এ প্রক্রিয়া খুলে দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা বছর জুড়ে শূন্যপদের তথ্য পাঠানোর সুযোগ পাবেন। আর প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন বা ই-রেজিস্ট্রেশন এবং শূন্যপদের তথ্য এন্ট্রি বা ই-রিকুইজেশন প্রক্রিয়া শিক্ষা অধিদপ্তরগুলোকে দেয়া হবে। নির্দিষ্ট কোনো সময় বা তিন মাস পর পর শূন্যপদের তথ্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সংগ্রহ করবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিষয়ে ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানিয়ে এ বিষয়ে আদেশ জারির উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এনটিআরসিএকে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব দিয়ে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ ডিসেম্বর জারি করা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র সংশোধন নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরিপত্র অনুসারে বছরে একবার শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহের সুযোগ থাকলেও তা সংশোধন করে সারাবছর শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহের পথ খুলে দেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয় ওই সভায়। তখন এনটিআরসিএর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো, নির্দিষ্ট সময় বা তিন মাস পর পর শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ করে প্রার্থীদের বছরে একাধিকবার শিক্ষক পদে নিয়োগ সুপারিশের ব্যবস্থা করা হবে।
এনটিআরসিএর শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান শাখা শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের কাজটি পরিচালনা করে। এ শাখার পরিচালক কাজী কামরুল আহসান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, নির্ভুলভাবে শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ করা গেলে নির্ভুলভাবে প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করা সম্ভব।
এনটিআরসিএর একটি সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানায়, শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ ও তা যাচাই বাছাইয়ে অনেকটা সময় চলে যায়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছ থেকৈ অনেকসময় সহযোগিতাও পাওয়া যায় না। তাই অধিদপ্তরগুলোর কাছ থেকে শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ করতে চাচ্ছে এনটিআরসিএ।
কর্মকর্তারা বলছেন, সারাবছর ইরেজিস্ট্রেশন ও চাহিদা দেয়ার সুযোগ দেয়া হলে নির্দিষ্ট সময় তিন মাস পর পর তা সংগ্রহ করে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া গেলে গত কয়েকবছর ধরে চলা শিক্ষক সংকট কাটানো সম্ভব হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এনটিআরসিএর পরিকল্পনা শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ ও ই-রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া অধিদপ্তরগুলোকে হস্তান্তর করা। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ওই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সারা বছর শূন্যপদের চাহিদা অন্তর্ভুক্ত করবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা যা যাচাই করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের পাঠাবেন। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা তা যাচাই করে অধিদপ্তরকে দেবে। একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর এনটিআরসিএ অধিদপ্তরগুলো থেকে শূন্যপদের তথ্য নিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নিবন্ধিত প্রার্থীদের শূন্যপদের বিপরীতে নিয়োগ সুপারিশ করবে। এতে শূন্যপদের তথ্যে ভুলও হবে কম। এসব বিষয়ে লিখিতভাবে জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে আদেশ, নির্দেশনা বা পরিপত্র জারির অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাওয়ার আগে এ বিষয়ে দৈনিক আমাদের বার্তার কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি এনটিআরসিএর সচিব মো. ওবায়দুর রহমান।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।