সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য সাড়ে ৩৭ হাজার প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৯ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী প্রার্থী নিয়োগের জন্য নির্বাচিত হননি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তাদের নিয়োগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা। প্রার্থীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী ব্যবস্থা না নিলে বই-সার্টিফিকেট প্রেস ক্লাবের সামনে পুড়িয়ে ফেলবো। শিক্ষক পদে নিয়োগ না পেলে আগামী ২৭ ডিসেম্বর সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ‘বই ও সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলবেন’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচিত না হতে পারা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী প্রার্থীরা তাদের নিয়োগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা কলেজের ১০ জন চাকরি প্রত্যাশী গ্র্যাজুয়েট উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৪-১৫ সেশনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী কামাল হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী ব্যবস্থা না নিলে বই-সার্টিফিকেট প্রেস ক্লাবের সামনে পুড়িয়ে ফেলবো। আমরা ইতোমদ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। তার এপিএস-২ এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি, কিন্তু কোনো আশা পাইনি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাজ্জাদ হোসেন সাজু বলেন, প্রতিবন্ধীবান্ধব গবেষণা, পরিকল্পনা, এ সংক্রান্ত বিধান বাস্তব প্রয়োগ না হওয়া ও উপযোগী পরিবেশ প্রায় না থাকা সত্ত্বেও আমরা কঠিন সংগ্রাম ও প্রতিযোগিতা করে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেছি। এত কঠিন পথ অতিক্রম করে খুবই অল্প সংখ্যক ব্যক্তি গ্রাজুয়েশন শেষ করতে পারেন। কিন্তু যদি রাষ্ট্র এ গুটিকয়েক মানুষের দায়িত্ব নিতে অক্ষম হয়, তখন সমগ্র প্রতিবন্ধী সমাজের দায়িত্ব কিভাবে বহন করবে?
তিনি আরও বলেন, গত ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদের নিয়োগের চূড়ান্ত ফলে ৩৭ হাজার ৫৭৪ জন শিক্ষক বাছাই করা হয়েছে। অথচ লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সত্বেও ১৯ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী প্রার্থী নিয়োগ পাননি। বর্তমান ঊর্ধ্বগতির বাজারে পরিবারের কাছে আমরা বোঝায় পরিণত হয়ে লজ্জায় ঘৃণায় পেরেছি।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন পারুল বেগম (ইডেন মহিলা কলেজ), মো. রাকিবুল ইসলাম (চবি), রাহাত খান (চবি), মাহবুব শেখ (চবি), শিবনাথ কুমার সরকার (ঢাবি), মো. আজাদ হোসেন (জাবি), পার্থ প্রতিম মিস্ত্রি (ইবি), হাসিনা আক্তার (ঢাবি)। সম্মেলন শেষে তারা প্রধানমন্ত্রীর দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন।