অসংখ্য কিন্ডারগার্টেনসহ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষাক্রমের প্রশিক্ষণের আওতামুক্ত। এ ছাড়াও ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১ম শ্রেণির ধারাবাহিক মূল্যায়নের ছোঁয়া পায়নি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যতিরেকে কিন্ডারগার্টেন, সরকারি-বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রাথমিক শাখা। ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে ধারাবাহিক মূল্যায়ন চালু হতে যাচ্ছে ২য় শ্রেণি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে তৃতীয় শ্রেণি। নব শিক্ষাক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে দূর হবে মুখস্থ করার প্রবণতা, নোট-গাইড, কোচিং এর ব্যাপকতা। শিক্ষার্থীর মাঝে জাগ্রত হবে প্রতিযোগিতার পরিবর্তে সহযোগিতা। প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতি অনেকটা হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎসার মতো। প্রশ্ন প্রণয়নকারী তার ইচ্ছামত কতিপয় প্রশ্নের মাধ্যমে মেধা যাচাই করে থাকেন। এতে প্রকৃত মেধা বা জ্ঞান যাচাই সম্ভব হয়ে উঠেনা। প্রশিক্ষণ ছাড়া বিদ্যালয়গুলো পূর্বের ন্যায় পরীক্ষার মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণ করেছেন।
বলা, লেখাসহ পাঠের জ্ঞান অর্জন করিয়ে শিক্ষককে সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে। অনুপস্থিত বা দুর্বল শিক্ষার্থীকে বিশেষ ক্লাস বা যত্নের মাধ্যমে শিখন ঘটতি দূর করার ব্যবস্থা ধারাবাহিক মূল্যায়ন ব্যবস্থায় বিদ্যমান। যেহেতু শিক্ষর্থীর প্রতি পিরিয়ড, প্রতিদিন প্রতি সপ্তাহ বা প্রতিনিয়ত মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়নকে সর্বক্ষনিক পরীক্ষা হিসেবে অভিহিত করতে পারি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ১ম-৩য় শ্রেণি পর্যন্ত ধারাবাহিক মূল্যায়ন সারা দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজ্য। যাতে সকল শিক্ষার্থী মূল্যায়নের সুফল ভোগ করতে পারেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সকল শিশুকে ধারাবাহিক মূল্যয়নের ছাতার নিচে আনা। ঢাকাসহ বাংলাদেশের শহরাঞ্চলের অসংখ্য কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক শাখা অনুমতিবিহীন ভাবে পাঠদান কার্যক্রম চলছে।
এ কার্যক্রম বছরের পর বছর এমনকি যুগের পর যুগ ধরে চলে আসছে। বিদ্যালয়গুলো স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাধ্যমে সরকারের বিনামূল্যের বই, রেজিষ্ট্রেশন, ৮ম, এসএসসি পরীক্ষাসহ যাবতীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। উক্ত অনুমোদনবিহীন বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকরা ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষাক্রমের প্রশিক্ষণ থেকে সংগত কারণে বাদ পড়েছেন। প্রশিক্ষণ না থাকায় বিদ্যালয়গুলো পুরোনো আদলে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির পরীক্ষা নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের দেখভাল করার কোনো কর্তৃপক্ষ বা সুযোগ নেই। সঙ্গত কারণে তারা অস্তিত্ব বহাল রাখার জন্য পরীক্ষা পদ্ধতির পক্ষে জনমত সৃষ্টি করে চলেছেন। দ্রুত তাদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা অথবা চ্যালেঞ্জ দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।১ম, ২য় ও তৃতীয় শ্রেণির ধারাবাহিক মূল্যায়ন, পরবর্তী শ্রেণিতে ৪০ শতাংশ ধারাবাহিক ও ৬০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন কাম্য। এ মূল্যায়ন শুধু লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে সীমাবদ্ধ না রেখে শিক্ষর্থীর শোনা, বলা, পড়া, লেখাসহ সার্বিক দক্ষতা বা জ্ঞান অর্জনের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন শিক্ষাক্রমের সকল চ্যালেঞ্জ দূর করার প্রত্যাশা রইলো, প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর।
লেখক: সভাপতি, বঙ্গবন্ধু প্রথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।