দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: রাজধানীর ভিকারুননিসা, আইডিয়াল, মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শাখা ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিচ্ছে শিক্ষা বোর্ড। প্রতিটি শাখা আলাদাভাবে পরিচালিত হবে এবং অধ্যক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটিও আলাদা করা হবে। এছাড়াও ভর্তি জালিয়াতি ও আর্থিক অনিয়ম রোধ এবং মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিটি স্কুলের জন্য পৃথক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর দেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানগুলো শাখার নামের সঙ্গে পূর্বের নাম ব্যবহার করতে পারবে। যেমন ভিকারুননিসা আজিমপুর, বসুন্ধরা বা ধানমন্ডি স্কুল অ্যান্ড কলেজ- এভাবে নাম ব্যবহার করা হবে।
শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে সাউথ পয়েন্ট ও মাইলস্টোন কলেজে তাদের শাখাগুলোর জন্য পৃথক পৃথক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর দেওয়া হয়েছে। আরো যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও এমন করা হবে।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, নামিদামি বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন অধ্যক্ষ হয়েও আরো কয়েকটি শাখার দায়িত্ব পালন করেন। এতে ওই শাখার নানা ধরনের অনিয়ম দুর্নীতি দেখা দেয়। কিন্তু নানা কারণে তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। কখনো অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষকের আশ্রয়ে তা হয়ে থাকে।
সম্প্রতি রাজধানীর আইডিয়াল স্কুলে সাবেক অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমের এরকম একটি ভয়াবহ অর্থ জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। প্রতিষ্ঠানটি তদন্ত করে দেখে, মূল শাখার বাইরেও বনশ্রী ও মুগদা শাখাতেও দেখভাল করতেন ওই অধ্যক্ষ। এজন্য দায়িত্ব ভাতা নিয়েছেন এক কোটি ৭৩ লাখ টাকা। শুধু তা-ই নয়, ১০ বছরে তিনি নগদ খরচ করেছেন ৭৮ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানের বাসায় থেকেও ভাড়া বাসা দেখিয়ে নিয়েছেন ৪০ লাখ টাকা। ৭০ কোটি টাকার এফডিআর সরিয়েছেন নিজের পছন্দের ব্যাংকে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একাধিক শাখা থাকায় অনেক অনিয়ম দুর্নীতি হয়, যা কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এজন্য গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা সংশোধন করা হচ্ছে। অচিরেই এটি জারি করা হবে। নতুন প্রবিধানমালায় এই বিষয়গুলো যুক্ত করা হবে। প্রবিধানমালা জারি হওয়ার পর প্রতিটি স্কুলে চিঠি দিয়ে বিষয়টি শাখা ক্যাম্পাসগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হবে।মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুলসহ বেশ কয়েকটি স্কুলের অনেকগুলো শাখা রয়েছে। এগুলোর কোনো অনুমোদন নেই। এতসংখ্যক শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করে, যা একজন অধ্যক্ষের পক্ষে সামলানো বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
এ কারণে শাখাগুলোকে পৃথক স্কুল হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হবে। এতে প্রতিটি স্কুলের অধ্যক্ষ থাকবেন। তাদের পক্ষে স্বাভাবিকভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা সহজ হবে। বিষয়টি নিয়ে একাধিক সভায় আলোচনা হয়েছে।