শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তির অভিযোগে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ওটারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রশাসন।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম শাহ মাজেদ হোসেন রনি। তিনি কবিরহাট উপজেলার ওটারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক।
তদন্ত কমিটি গঠনের সত্যতা নিশ্চিত করেন কবিরহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত রায় বলেন, মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি আজ বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। বিদ্যালয় থেকে ফিরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা সুলতানাকে অবহিত করেন। এ ঘটনায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অমৃত দেব নাথকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করার প্রতিবাদে গত শনিবার বিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীরা ও স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন। মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, গত ৪-৫ দিন আগে ওটারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজী শিক্ষক শাহ মাজেদ হোসেন রনি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে কটাক্ষ করে নিজের ফেসবুকে পোস্ট দেন। ওই পোস্টে তিনি জানান ‘‘আবারো ইনিয়ে বিনিয়ে গবেষণামূলক সেই রাজনৈতিক প্যাঁচমারা বিবৃতি। শেষ পর্যন্ত শিক্ষার সিজার করেই ছাড়ল ডা: থেকে ঘটনাচক্রে হওয়া অথর্ব শিক্ষামন্ত্রী’’।
এর আগে, গত বছরের ১৫ অক্টোবর ছাত্রীর সাথে অশ্লীল আচরণ ও ইভটিজিংয়ের অভিযোগে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন রনির বিরুদ্ধে। পরে ওই ঘটনায় তিনি ক্ষমা চেয়ে পার পেয়ে যান।
ওটারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.মমিনুল হক জানান, ওই শিক্ষকের ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছেন। রনি একজন ভালো শিক্ষক বলেও তিনি দাবি করেন। প্রধান শিক্ষক মো.মমিনুল হক আরও জানান, সোমবার দুপুরের দিকে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে অভিযুক্ত শিক্ষক রনিকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে।
বাটইয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন শাহিন বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি করেছেন শিক্ষক রনি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তির ঘটনায় তিনি এই শিক্ষকের তদন্ত পূর্বক শাস্তি দাবি করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক শাহ মাজেদ হোসেন রনি অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, আমি ছাত্রছাত্রীদের ভালোর জন্য বিদ্যালয়ের পড়ালেখায় একটু কড়াকড়ি আরোপ করি। এটি হয়তো অনেক ছাত্রছাত্রীর ভালো লাগেনা। এজন্য কিছু শিক্ষার্থী বাহিরের কিছু লোকের প্ররোচনায় এই মিথ্যাচার চালাচ্ছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাদেকুর রহমান সাধারণ ডায়েরি (জিডি) নেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন। এ ঘটনায় তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা সুলতানা বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি ঘটন করা হচ্ছে।