দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ বন্ধের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে বাইডেন প্রশাসন। এরই মধ্যে দেশটির ৪৫টি অঙ্গরাজ্যের ১৪০টির মতো প্রতিষ্ঠানে এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গাজায় একটি যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চালাচ্ছে হোয়াইট হাউস। এক্ষেত্রে ইসরায়েলের দেওয়া শর্ত মেনে নিয়ে জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাসের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম এপি জানিয়েছে, ছাত্র বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে গত এক সপ্তাহে মার্কিন ক্যাম্পাসগুলোতে ব্যাপক ধরপাকড় চালানো হয়েছে। আটক করা হয়েছে দুই সহস্রাধিক আন্দোলনকারীকে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে এর ঢেউ গিয়ে আছড়ে পড়ছে ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। একতরফা এই যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে আওয়াজ তুলছেন যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকো, জাপান, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এ বিক্ষোভের মুখে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য মিসরের রাজধানী কায়রোয় হাজির হয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক উইলিয়াম বার্নস। হামাসের তরফেও গাজায় যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য গতকাল কায়রোয় প্রতিনিধিদল পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এ যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি মধ্যস্থতা করছে কাতার ও মিসর। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, হামাস ও সিআইএ কর্মকর্তারা কায়রোয় মিসরীয় মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। গতকাল এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে গত রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাজায় একটি যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে তাদের অবস্থান ইতিবাচক। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনিদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে এমন একটি চুক্তির ব্যাপারে হামাস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, কয়েক মাস ধরেই যুদ্ধবিরতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে আলোচনা হলেও সম্প্রতি এতে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে ফিলিস্তিনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-কুদস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনো বেশ কিছু উপাদান অমীমাংসিত রয়ে গেছে। এর মধ্যে বিশেষ করে ইসরায়েলি পক্ষের নমনীয়তা, হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তাদের জীবিত থাকার প্রমাণের মতো বিষয়গুলোও রয়েছে। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি সপ্তাহের শেষ নাগাদ একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো। গতকালও মিসর, কাতার, ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলি আলোচকদের মধ্যে আলাপ হয়েছে। ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দিবিনিময়ের অনুপাত কেমন হবে, তা নিয়ে তাদের মধ্যে কথা হয়েছে।
মিসরীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, হামাস স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছে।