জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, জীবনে যতো দুঃখ-কষ্ট, ঘাত-প্রতিঘাত আসুক না কেনো শিক্ষার্থীদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।
বুধবার গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে সিনেট হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তর আয়োজিত কর্মচারী পোষ্যদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
১৬৩ জন কর্মচারীর ২০৬ জন সন্তানকে শিক্ষাবৃত্তি দেয়া হয়। ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে মাস্টার্স শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নরত সন্তানদের এই বৃত্তি দেয়া হয়। এ সময় উপাচার্য শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষাবৃত্তির চেক তুলে দেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, তুমি কোন পরিবারের, কোন জায়গা থেকে এসেছো সেটি বিবেচনার বিষয় নয়, তুমি একজন মানুষের সন্তান, এই পৃথিবী তোমার।
তিনি বলেন, আগামী দিনের যে পৃথিবী তার মালিক আমরা কেউ না। আগামী পৃথিবীর মালিক তুমি। তুমি যেভাবে করে পৃথিবী গড়বে, তোমার পৃথিবী তেমনটি হবে। আদর্শবান ভালো মানুষ হওয়াটা খুব জরুরি। সেটি হতে পারলেই তোমার মা-বাবার যতো পরিশ্রম তা স্বার্থক হবে। দিন শেষে তুমি যদি দুর্নীতিবাজ মানুষ হও তা হবে বাবা-মায়ের জন্য কষ্টের। দুঃখ, কষ্ট, প্রতিঘাত আসুক কিন্তু তুমি ভালো মানুষ হও।
উপাচার্য বলেন, আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু আপনারা সবাই মিলে বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
আমি চাই বাবা-মায়ের কর্মস্থলের প্রতি এই সন্তানদের শ্রদ্ধা তৈরি হোক, ভালোবাসা তৈরি হোক। তাদের জীবনজুড়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা থাকুক।
সবাই যখন অর্থ বিত্তের পেছনে ছুটছে তখন সন্তানকে এটা শিখানো খুব জরুরি যে, ক্যারিয়ারিস্ট হওয়া বড় কথা না। বরং একজন ভালো মানুষ হওয়া আমাদের সমাজের জন্য, বিশ্বের জন্য, সভ্যতার জন্য খুব জরুরি।
অভিভাবকদের উদ্দেশে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, সন্তানদের সমস্যা দিন, চ্যালেঞ্জ দিন। আমরা চাই সন্তানরা যেনো কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতার মধ্যে না পড়ে।
আমি বলবো, আপনার নিত্য দিনের সমস্যা সন্তানকে বুঝতে দিতে হবে। পৃথিবী চ্যালেঞ্জের এটিও সন্তানকে বুঝতে দিতে হবে। তাদের মধ্যে অদম্য স্পৃহা দিতে হবে, যা কিছু আসুক পৃথিবীর ইতিহাস বলে মানুষ ব্যারিয়ারগুলো ভেঙে-ভেঙে সভ্যতা গড়ে তোলে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন, অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক মো. সাজেদুল হক, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও শুদ্ধাচার দপ্তরের পরিচালক জয়ন্তু ভট্টাচার্যসহ বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক, বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।