শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষায় রূপান্তর ঘটানোর জন্য আমরা নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে এসেছি। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি নতুনভাবে করা হয়েছে। ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শ্রেণিতে এ নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে আমরা একজন শিক্ষার্থীকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় দিবসে বিভিন্ন সৃজনশীল কাজে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, যে ভবিষ্যতের জন্য আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের তৈরি করছি সেই ভবিষ্যতে মূল দক্ষতাই হবে শিখতে পারার দক্ষতা। সেখানে একজন শিক্ষার্থীর যোগাযোগের দক্ষতা, সূক্ষ্ম চিন্তার দক্ষতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, অনেকের সঙ্গে কাজ করার দক্ষতা থাকতে হবে। আর যে শিক্ষার্থী যতো বেশি সৃজনশীল ও মুক্তচিন্তা করবে সেই শিক্ষার্থী এসব বিষয়ে ততোই দক্ষ হয়ে উঠবে। মুখস্ত বিদ্যা দিয়ে আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব হবেনা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, সৃজনশীল কাজে ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীরা যেভাবে জড়িত ঢাকা বা চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীরা সেভাবে জড়িত নয়। শহরের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার বাইরে কিছু করতে দেয়া হয় না। বলা যায়, শহরের শিক্ষক-অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের মানসিক নির্যাতন করছেন। ভালো ফল করার চাপ দিয়ে তাদের জীবন বিপন্ন করে দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশেই ১৬ বছর বয়সের আগে কোনো শিক্ষার্থীকে মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয় না। অথচ আমাদের দেশে ১০ বছর বয়স হলেই একটি ছেলেকে মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এই শিক্ষার্থীর যখন মেধা অর্জনের সময়, শিক্ষা গ্রহণের সময় তখন তাকে মেধাবী শিক্ষার্থীর তকমা দিয়ে নির্যাতনের মুখে ফেলে দেয়া হয়। আমরা তাকে মূল্যবোধ শেখার কোনো সুযোগ দিচ্ছি না, সৃজনশীলতা বিকাশের সুযোগ দিচ্ছি না।
ফল নির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ফল নির্ভরতা থেকে বের না হলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ আমরা ধরতে পারবো না। আজ একজন শিক্ষার্থী মুখস্ত করে ভালো ফল করলেও শিল্প বিপ্লবের পর্যায়ে এসে তাকে নতুন করে শিখতে হবে। না হলে সে ঠিকে থাকতে পারবে না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেন এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান।